চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদী কানুদি লঞ্চঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সজিব আহম্মেদ শ্যামল (২২) এর মরদেহ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে তার মরদেহ নদীতে ভেসে উঠলে স্থানীয় জেলেরা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে তার বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ হস্তান্তর করে। জানা গেছে, বুধবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে শতাধিক যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে এমএল হেদায়েত নামের নারায়ণগঞ্জগামী লঞ্চটি ছেড়ে যায়। সকাল সোয়া ৭টায় কানুদি ঘাটে পৌঁছে যাত্রা বিরতি দিয়ে যাত্রী নিয়ে পুনরায় নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়। এ সময় কানুদি এলাকার সাউদ বাড়ির আক্কাস সাউদের ছেলে সুজন সাউদ (২৫), সজিব সাউদ (২১), তাদের বন্ধু সজিব আহম্মেদ শ্যামলকে নিয়ে মনোহারখাদী গ্রামের মিজি বাড়ির রুহুল আমিন মিজির ছেলে ইয়াছিন মিজিকে (২১) দিয়ে একটি ছোট নৌকাযোগে লঞ্চে উঠার চেষ্টা করে। এ সময় ইয়াছিন মিজি লঞ্চের পেছনে নৌকা না নিয়ে সামনে নিয়ে আসে। লঞ্চের ধাক্কায় ছোট নৌকাটি ভেঙ্গে চুরে নদীতে তলিয়ে যায়। সজিব সাউদ, তার ভাই সুজন সাউদ ও নৌকার মাঝি ইয়াছিন মিজি সাঁতার কেটে ও জেলে নৌকার সহায়তায় প্রাণে বাঁচলেও সজিব আহম্মেদ শ্যামল নদীতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে মাঝ নদী থেকে এমএল হেদায়েতকে পাড়ে এনে থামিয়ে রাখে। বেলা ১১টায় চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন, ইনচার্জ মোশারফ হোসেন, চাঁদপুর উত্তর ফায়ার স্টেশনের ডিএডি আনোয়ারুল হক ডুবুরিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী আমিনুর রহমান ও খোকন দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা মেঘনা নদীর উত্তাল স্রোতে নিখোঁজ সজিব আহম্মেদ শ্যামলের সন্ধান করেন। কিছু সময় বিরতির পর তারা আবারো নদীর তলদেশে সন্ধান করে ব্যর্থ হয়। সন্ধ্যা ৬টায় ডুবুরী দল তাদের উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দেন। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের অদূরে তার মরদেহ ভেসে উঠে। শ্যামলের বাবার নাম মো. সামছুল হক। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে শ্যামল ছিলো দ্বিতীয়। তারা ঢাকার মুগদা এলাকার মান্ডায় বসবাস করেন। শ্যামলের ফুফাতো ভাই আবুল কাশেম জাগো নিউজকে জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সজিব ও সুজনের সঙ্গে শ্যামল তার দাদার মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসে। শ্যামলের মরদেহ তার বাবা ঢাকায় নিয়ে গেছে। সেখানেই তার দাফন করা হবে। ইকরাম চৌধুরী/এসএস/পিআর
Advertisement