কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা, আর সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে জনজীবন। গত চারদিনে এ জেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। মাঝ রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। বৃষ্টির মতো ঝরে শিশির।
Advertisement
দুপুরে ঘণ্টা খানেকের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ কম। ২টার পর আবার হারিয়ে যায় সূর্য। ফলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় এখন নাকাল কুড়িগ্রামের মানুষ। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগে পড়েছেন নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল এবং নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা। শিশু ও বয়স্করাও পড়েছেন শীত দুর্ভোগে। পাশাপাশি গবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না এ থেকে।
এদিকে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন শীতার্তরা। তারা বেশি ভিড় করছেনে ফুটপাতের পুরানো কাপড়ের দোকানে। নিজেদের সাধ্যমত কিনছেন শীতবস্ত্র।
নাগেশ্বরীতে ফুটপাতের দোকানে আসা এমনই একজন নারায়ণপুর ইউনিয়নের মুকুল মিয়া। জানান, কয়েকদিন যাবত শীত বাড়ায় পরিবারের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছেন।
Advertisement
রিকশাচালক মোতাহার আলী জানান, ঘন কুয়াশা এবং ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে সময় মতো রাস্তায় বের হতে পারছেন না।
সোনাহাট স্থলবন্দরের শ্রমিক হাসেম আলী, আব্দুল করিম জানান, সকাল ৮টায় পাথর ভাঙার কাজে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও কুয়াশার কারণে এক ঘণ্টা পিছিয়ে যায় কাজ। ফলে আয় কমেছে।
এদিকে কুয়াশা বাড়ায় নিতান্তই প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। আর সন্ধ্যা নামতে না নামতেই গুটিয়ে যাচ্ছে হাট বাজার, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের দোকানপাট। সকালে স্কুলগামী শিশু এবং বৃদ্ধদের কষ্ট বেড়েছে দ্বিগুণ। সারাদিন সূর্যের দেখা না মেলায় গরম কাপড় জড়িয়েই কাজে যোগ দিতে হচ্ছে সবাইকে।
কুড়িগ্রামে আজ (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জাকির হোসেন জানান, আগামী শুক্রবারের (২০ ডিসেম্বর) পর তাপমাত্রা আরও কমবে এবং শুরু হবে শৈত্যপ্রবাহ।
Advertisement
এদিকে শীতের কারণে বাড়ছে ঠাণ্ডা জনিত রোগের প্রকোপ। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শাহিনুর সরদার শিপন জানান, ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে কিছু কিছু রোগী আসছেন। তবে, শীতের প্রভাব এখনও তেমন শুরু হয়নি।
জেলা ত্রাণ শাখা থেকে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় মোট ৫১ হাজার ৫১৪টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, শীত মোকাবেলায় তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
নাজমুল হোসাইন/এমএমজেড/পিআর