বোরকার প্রতি চরম ক্ষোভ ও অবমাননা দেখালো অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ও রাজনীতিক পৌলাইন হানসোন। অস্ট্রেলিয়াতে বোরকাকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংসদে বোরকা পরে বক্তব্য শুরু করে হানসোন। পরে অবমাননাকর ভঙ্গিতে টেনে-হিঁচড়ে নিজের পরিহিত বোরকা খুলে ফেলে। বোরকা পরা ও খোলার এ দৃশ্য চরম ইসলাম বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।
Advertisement
৬৫ বছর বয়সী পৌলাইন হানসোন রাইটউইং ওয়ান ন্যাশন পার্টির প্রতিষ্ঠা। তার এ ইসলাম বিদ্বেষী আচরণে কোয়ালিশন ও লেবার পার্টির সিনেটররা তীব্র নিন্দা জানিয়েছন। তার বিরুদ্ধে ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণের অভিযোগও তুলেছেন তারা।
বোরকা পরে ইসলাম ও মুসলিমদের কটাক্ষ করতে সিনেট কক্ষে প্রবেশ করায় তাকে টার্নবুল সরকারও তিরস্কার করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় আইন করে বোরকা নিষিদ্ধের উদ্দেশ্যেই এ মুসলিম বিদ্বেষী নারী নেত্রী ঘৃণ্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সে জাতীয় সুরক্ষার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে। সিনেট অধিবেশনে সে মুসলিমদের এ ধর্মীয় পোশাক নিষিদ্ধের আহ্বান জানায়।
Advertisement
এছাড়াও পৌলাইন হানসোন চ্যানেল নাইন-এর এক সাক্ষাৎকারে ‘সব মুসলমানদের প্রতি তার সন্দেহ হয়’ বলে মন্তব্য করে। আবার যে সব নারীরা বোরকা পরে তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করারও আহ্বান জানায়।
সাক্ষাৎকারে সে আরও জানায়, ‘আমি বিশ্বাস করি এমন কিছু (মুসলমান) আছে যারা একটি শান্তিপূর্ণ এবং ভালভাবে জীবনযাপন করতে চায়। তবে কীভাবে তাদেরকে অন্যান্য মুসলমানদের থেকে আলাদা করা যায়?
সাক্ষাৎকারে বোরকা নিয়ে তার মন্তব্য ছিল এমন, ‘আমি মনে করি মুখ ঢেকে রাখা ভুল।যদি তারা এইভাবে জীবনযাপন করতে চায় এবং শরিয়া আইন মেনে চলতে চায় তবে আমি প্রস্তাব দেবো যেন তারা অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে কোনো মুসলিম দেশে চলে যায়।’
অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিম অভিবাসনকে দেশটির চরম অবনতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করে মুসলিম অভিবাসন রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় হানসোন। তার যুক্তি অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিম অভিবাসন দেশটিকে তৃতীয় বিশ্বের দেশে পরিণত করবে।
Advertisement
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার সিনেট অধিবেশনে রোবকা নিষিদ্ধের দাবি উত্থাপন করার পর তার এ দাবিকে নাকচ করে দেন সিনেট নেতা অ্যাটর্নি জেনারেল জর্জ ব্র্যান্ডিস। তিনি পৌলাইন হানসোনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন জোট সরকারের বোরকা নিষিদ্ধ করার কোনো ইচ্ছা নেই।’
সিনেটরদের নেতা ওয়ান ম্যানশন নেতাকে তার মুসলিম বিদ্বেষমূলক আচরণের ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। বোরকা নিষিদ্ধের জন্য পৌলাইন হানসোন অধিবেশনে যে নাটক মঞ্চস্থ করেছে সে ব্যাপারে জর্জ ব্রান্ডিস বলেন, ‘আপনি যে ইসলামের অনুগামী নন, এটি আমরা জানি। সুতরাং বোরকার ব্যাপারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে এটি আপনার স্ট্যান্টবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি সিনেটর হানসোনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অস্ট্রেলীয়রা ধর্মীয় অনুভূতির ব্যাপারে অনেক সংবেদনশীল। সুতরাং ধর্মীয় বিষয়ে কোনো অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না। আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল পরামর্শ আপনি ধর্মীয় অপরাধবোধ থেকে বিরত থাকবেন।
সিনেটরদের নেতা জর্জ ব্রান্ডিস বলেন, ‘অর্ধ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। তারা অস্ট্রেলিয়ার আইন যথাযথ মেনে চলে।
মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোসহ বোরকার প্রতি অবমাননা প্রদর্শনের নিন্দনীয় কাজের ব্যাপারে অনুশোচনার পরামর্শ দেন তিনি।
এমএমএস/এমএস