স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মরদেহের ময়নাতদন্তে তার শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, রুম্পার মরদেহ ময়নাতদন্তে আমরা তিনটি টেস্ট করেছি; এর মধ্যে বায়োলজিক্যাল টেস্টের প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। এতে দেখা গেছে, তার শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল (রোববার) আরও দুটি প্রতিবেদনের রিপোর্ট পাওয়া যাবে। সব পেলে তিনটা মিলে একটা প্রতিবেদন তৈরি করে আমরা পুলিশের কাছে জমা দেব।
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে অজ্ঞাত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন। সুরতহালে পুলিশ গুরুতর কিছু ইনজুরি পায়। সংগৃহীত আলামত ফরেনসিকে পাঠায়।
Advertisement
ওই ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ জানান, নিহত তরুণীর হাত, পা, কোমরসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ভাঙা ছিল। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে স্পষ্ট হবে। ভবন থেকে পড়ে মারা যাওয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না? তা জানতে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এরপর ৫ ডিসেম্বর রাতে রমনার ওসি নিহতের পরিচয় নিশ্চিতের তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘নিহতের নাম রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা। তার বাবার নাম রোকন উদ্দিন। তিনি হবিগঞ্জ এলাকায় পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত। রুম্পার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায় হলেও রাজধানীর মালিবাগের শান্তিবাগ এলাকায় থাকতেন।’
এদিকে রুম্পার ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’কে হত্যাকণ্ড আখ্যা দিয়ে এর বিচার চেয়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ করেছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
Advertisement
এরই মধ্যে রুম্পার কথিত প্রেমিক আবদুর রহমান সৈকতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর তাকে রিমান্ডেও নেয়া হয়।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, রুম্পা-সৈকতের সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সৈকত। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
এআর/এসএইচএস/এমকেএইচ