বিজেপি সরকার অমুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রদান সংক্রান্ত বিল সংসদে পাস করিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয়কক্ষে পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে (সিএবি) স্বাক্ষর করায় সেটি এখন আইন। নাগরিকত্ব প্রদান নিয়ে মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
Advertisement
সিএবি নিয়ে টুইট বার্তায় তসলিমা লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসিনি। আমি ভারত এসেছি সুইডেন থেকে। আমি মনে করতাম, আমার বসবাসের জন্য ভারতই ভালো। আমি এখনো তাই মনে করি। অনেক হিন্দু যারা ইউরোপে বসবাস করছেন তারা আমার মতো করে ভাবে না। যারা দেশকে ভালোবাসে তাদেরই দেশে থাকা উচিত।’
তসলিমা নাসরিন দ্বিতীয় এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কি আছে? ভারত তার বিশাল সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিতাড়িত করছে না। এটা (আইনটি) শুধু অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে। পাশ্চাত্যের অনেক দেশ এখন মুসলিমদের গ্রহণ করতে চায় না। সেটা কেনো আমরা সবাই তা জানি। যাইহোক গতরাতে আমি ‘তাজমহল’ নামে একটা ফ্রেঞ্চ সিনেমা দেখছিলাম, যেটা মুম্বাই হামলার গল্প নিয়ে তৈরি।
কলকাতার একটি দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী তসলিমা নাসরিন দেশটির একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা খুব ভালো খবর যে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পারসি এবং অন্যান্যরা নাগরিকত্ব পাবেন কিন্তু মুসলিমরা পাবেন না। যারা মুসলিম নয়, যেমন আমি নাস্তিক, আমার পাশাপাশি উদার মুসলিম এবং ‘মুক্ত চিন্তার’ মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হলে ভালো হয়।’
Advertisement
এর আগে গতকাল এক টুইট বার্তায় তসলিমা লেখেন, ‘ইসলামী দেশগুলোতে উদার, নিরপেক্ষ, মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী, নাস্তিক এবং ইসলামের সমালোচনাকারীরা অমুসলিমদের চেয়ে সরকার ও ধর্মান্ধ মুসলিমদের দ্বারা অনেক বেশি নির্যাতন, নিপীড়ন, অবরুদ্ধ, নির্বাসন ও হত্যার শিকার হচ্ছেন।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় এবং বুধবার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ উত্থাপিত বিলটি এখন ভারতের আইন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিলটি পাসে কোনো বেগ পেতে হয়নি বিজেপিকে।
নতুন এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যেসব অমুসলিম ভারতে এসেছেন, তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে আর ভাবা হবে না বরং তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।
বিরোধী দলের এমপিরা পার্লামেন্টে মোদি সরকারের প্রস্তাবিত এই বিলটিতে আপত্তি জানালেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সরকারকে বিলটি পাসে কোনো বেগ পেতে হয়নি সরকারকে। বিরোধীরা বলছেন, নতুন আইনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিক সুরক্ষা উপেক্ষা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
Advertisement
এসএ/এমকেএইচ