বিনোদন

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান বিশ্বে প্রশংসিত : ফয়সাল

নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় মডেলদের মধ্যে তিনি অন্যতম। কিউট ট্যালকম পাউডার কিংবা কোকাকোলার বিজ্ঞাপনের সেই লম্বা চুলের ফয়সাল আজও তার ভক্তদের মধ্যে আবেদন ছড়ান। একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী হিসেবেও সুপরিচিত। তিনি মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ। রাজনীতির ময়দান বা দর্শকদের কাছে তিনি ফয়সাল আহসান হিসেবেই পরিচিত।

Advertisement

একসময়ের জনপ্রিয় মডেল ফয়সাল দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বালাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির (১৯৯৩ সাল) ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানেও জড়িয়ে আছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুব ও ক্রীড়া উপকমিটি এবং বন ও পরিবেশ উপকমিটির সদস্য হিসেবে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত অরাজনৈতিক সংগঠন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’- এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন। এছাড়া সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হকি ফেডারেশেনের নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন কার্যনির্বাহী সদস্য পদে।

সাবেক এই হকি খেলোয়াড় ২০১৫ সালে সাবেক হকি খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত ‘ভ্যাটারান হকি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও কাজ করছেন।

Advertisement

সবমিলিয়ে রাজনীতি, ক্রীড়াঙ্গন, সামাজিক কর্মকাণ্ড ও নিজের ব্যবসা নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন ফয়সাল। সম্প্রতি তার মুখোমুখি হয়েছে জাগো নিউজ। তার সাম্প্রতিক ও ভবিষৎ চিন্তাভাবনা, কর্মকান্ডের পরিকল্পনা জানালেন তিনি। পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো সেই আড্ডা-আলাপ-

জাগো নিউজ : যতদুর জানি আপনি ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং এর পরপরই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। তখন স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পতনের পর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলো বিএনপি সরকার। সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের রাজনীতির সুযোগ থাকতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে কীভাবে জড়ালেন?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : কে ক্ষমতায় ছিলো আর কে ছিলো না সেটার চাইতে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ আমার আদর্শ, আমার বিশ্বাস, আমার ভালোবাসার প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞার মূল্য। আর আমার সেই আদর্শ, বিশ্বাস আর ভালোবাসার নাম ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই মহান নেতার প্রতি আমার ভাল লাগার শুরুটা একেবারে ছোটবেলা থেকেই। আমার বাবা মরহুম মোহাম্মদ ইসা সাখায়াতউল্লাহ তার ছাত্র জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৯ এর ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৭০ এর আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রিয়। ১৯৭১ সালে তিনি ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে পুরান ঢাকার শেখ বোরহানউদ্দীন কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও তিনি যোগদান করেছিলেন।

Advertisement

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন সদ্য স্বাধীন হওয়া যুদ্ধ বিধস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজে। সেই পিতার সন্তান হিসেবে আমি তো সুযোগ পেয়ে আদর্শকে জলাঞ্জলি দিতে পারি না।

আব্বার কাছে ছোটবেলা থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা গল্প,কথা শুনে বড় হয়েছি আমি। ছোটবেলায় আব্বার মুখে গল্প শুনে নিজের কল্পনায় তাকে অনেকবার এঁকেছি নানাভাবে। বলতে পারেন তখন থেকেই আসলে এক ধরনের ঐশ্বরিক ভালোবাসা, ভালোলাগা নিয়ে বড় হয়েছি তার আদর্শকে সঙ্গী করে। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে যখন আমি রাজনীতিতে যুক্ত হই।

জাগো নিউজ : আপনার রাজনীতির শুরুটা কীভাবে?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : আমি প্রথমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবেই রাজনীতি শুরু করেছিলাম। পরবর্তীতে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগ ইউনিট ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। এর পরপরই আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে নির্বচিত হই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেই কমিটির সভাপতি ছিলেন সে সময়ের রাজপথ কাঁপানো তুখোড় ছাত্রনেতা বর্তমান পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ভাই ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না ভাই।

জাগো নিউজ : সেই সময় রাজনীতির কোন বিষয়গুলো আপনাকে অনুপ্রাণিত করতো?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : সবসময় বঙ্গবন্ধু অনুপ্রাণিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হই। সে সময় এরিক ফেডেরিকের লেখা একটি বইয়ে 'কারিশমাটিক লিডারশিপ' নামক একটা অধ্যায় ছিল। সেই অধ্যায়ে সারা বিশ্বের যে অল্প ক’জন মহান নেতাদের বিষয়ে আলোচনা ছিল তার মধ্যে একটি অংশ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। সেই লেখাটি পড়ে আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করি এবং একইসাথে আমার রাজনৈতিক আদর্শ কি হবে বা হওয়া উচিত সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাই।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। শেখ রেহানাও ছিলেন অনুপ্রেরণায়। সব হারানো দুজন মানুষের লড়াইটা বোধকরি আশি নব্বই দশকের সব মানুষকেই অনুপ্রাণিত করতো। বিশেষ করে বলতে চাই ১৯৭৫ এর সেই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সময় আমি ছোট। কিন্তু একটা বিষয় আমার মনে তখন গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল তা হলো আমার আব্বাকে প্রায় সময় একটা বিষয়ে বেশ কষ্ট নিয়ে কথা বলতে শুনতাম। আর তা হলো বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া দুই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পুরো পরিবার হারানোর যে অসম্ভব, অসহনীয় যন্ত্রনা, কষ্টতে প্রতিনিয়ত থাকতেন সে বিষয়ে।

আমি আব্বার মুখে এই কথাগুলো যখন শুনতাম তখন আমার ছোট্ট মনেও প্রশ্ন জাগতো এতো কষ্ট নিয়ে মানুষ বাঁচে কীভাবে? সেই অসম্ভব কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষটাই যখন শোককে শক্তিতে পরিণত করে ১৯৮১ সালে সব হুমকি, ষড়যন্ত্র মাথায় নিয়ে দেশে ফিরে তার পিতার মতো জাতির মুক্তির প্রতীক হয়ে উঠছিলেন- তা দেখতে দেখতে আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসার একটা বিশাল অংশ জুড়ে জায়গা করে নিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাগো নিউজ : জানতে চাই আপনি রাজনীতি থেকে দূরে সরে ছিলেন বেশ অনেকটা সময়। কেন? আর নতুন করে ফিরে আসার প্রেরণাই বা কী?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : আসলে এ বিষয়ে একটা ভুল ধারণা আছে অনেকেরই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আদর্শ বা রাজনীতি কোনোটা থেকেই আসলে আমি দূরে ছিলাম না কখনো। দলের সকল কার্যক্রমেই আমি নিয়মিতভাবে অংশ নিয়েছি সবসময়। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলি ১৯৯৫-৯৬ তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। কাজেই দূরে ছিলাম কথাটা আসলে ভুল।

আসলে আমি একটা বিষয় সবসময় মেনে চলার চেষ্টা করি। তা হলো যখন যে দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হবে বা হয় তা তখন পরিপূর্ণভাবে, মনোযোগের সাথে তা পূর্ণ করার চেষ্টা করি। এখন সেটার জন্য যে আমাকে হাঁকডাক দিয়ে সবাইকে জানিয়ে করতে হবে এটা আমি মনে করি না। আমার উপর যিনি বা যারা দায়িত্ব দেন তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখাটা আমার কর্তব্য। আমার দায়িত্ব। এখন সেটা নীরবে হোক আর সরবে, আমি তা পালন করে এসেছি সবসময়। ইনশাল্লাহ সামনেও করবো।

জাগো নিউজ : তবে সাম্প্রতিককালে তুলনামূলক আপনাকে বেশ সরব দেখা যায়।

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : দেখুন আমি আরেকবার মনে করিয়ে দেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আদর্শ বা রাজনীতি কোনোটা থেকেই আসলে আমি দূরে ছিলাম না কখনো। মাঝে আমি যে রাজনীতির সাথে বা দলের সাথে যুক্ত ছিলাম না তাতো নয়। হয়তো তখন বিষয়টা অনেকে এখনকার মতো খেয়াল করেনি এমনটাও হতে পারে। এখানে খুব জরুরি একটা কথা আপনাকে বলি। রাজনীতি কিন্তু আমার পেশা নয়। রাজনীতি আমার নেশা, আমার ভালোবাসা, আমার অস্তিত্বের নিদর্শন।

ছোটবেলা থেকে আমি মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ যেভাবে বড় হয়েছি, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছি, একটু ভালোভাবে সবাইকে নিয়ে জীবনযাপন করছি তার সবকিছুতেই কিন্তু আমার দেশের অবদান রয়েছে। দেশের এই ঋণতো কোনোভাবেই শোধ করা সম্ভব নয় আমার পক্ষে। সুতরাং রাজনীতি, সুরাজনীতির মধ্য দিয়ে আমার মতো একজন নগন্য মানুষ দেশের কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারলে নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান মনে করবো। সেটাই করে চলেছি।

আপনারা নিজেরাই দেখছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধেয় সভাপতি, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নতির এক মহাসোপানে অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নতির লক্ষ্যে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন নিয়মিতভাবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার যে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান তা সারাবিশ্বে আজ প্রশংসিত।

বিএনপি সরকারের আমলে যেখানে দলীয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরে থাক বরং তাদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হতো সেখানে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজ দলের দলীয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেননি।

তার লক্ষ্য একটাই; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা। তার এই সংগ্রামে দেশের আপামর জনগণের মতো আমিও একজন কর্মী হিসেবে কাজ করছি, করে যেতে চাই আমৃত্যু।

জাগো নিউজ : আপনার ভবিৎষত পরিকল্পনাগুলো নিয়ে যদি একটু বলতেন....

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১, ২০৪১ ও আগামী ১০০ বছরে বাংলাদেশের উন্নতি ও উন্নয়নের যে ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আমরা কর্মীরা তার সেই স্বপ্নপূরণের পথে কাজ করে যেতে চাই। সুতরাং আমার ভবিৎষত পরিকল্পনার মধ্যে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশ যত এগিয়ে যাবে আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তত সুন্দর একটি দেশ উপহার দিয়ে যেতে পারবো। আমরা এখন আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র দেশ নই। বরং যারা আমাদের একদা এ নামে অবহিত করতো আজ তাদের কাছে আমরা বিস্ময়কর, উজ্জ্বল এক উদাহরণ।

সফল নেতৃত্বের গুণে, ক্যারিশমাটিক রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়া এক দেশের নাম এখন বাংলাদেশ। আজ আমরা বিশ্ব ব্যাংকের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে নিজেদের অর্থেই নির্মাণ করছি পদ্মা সেতুর মতো বিশাল একটি প্রকল্পের কাজ। আমরা এখন বিশ্ব ব্যাংকের মুখাপেক্ষী নই বরং বিশ্ব ব্যাংক এখন আমাদের উন্নয়নের মিছিলে নিজেকে সামিল করতে আগ্রহী। দেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে যে বৈপ্লবিক সাফল্য তা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞার পরিচয়। খেলাধুলাতে আমাদের যত অর্জন তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। দেশ এগিয়ে চলেছে, আমি সেই এগিয়ে চলার গতিকে আরো বেগবান করতে অবদান রাখতে চাই।

জাগো নিউজ : রাজনীতির বাইরে একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। সম্প্রতি আপনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশেনের নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন কার্যনির্বাহী সদস্য পদে। হঠাৎ নির্বাচনের কোন নির্দিষ্ট কারণ আছে কী?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : আসলে হঠাৎ নয়। হঠাৎ শব্দটা এখানে বললে ভুল হবে। কারণ আমি মডেলিং বা রাজনীতিতে আসার আগে হকি খেলার সাথে জড়িয়ে আছি। স্কুল জীবনসহ লীগেও আমি টানা দশ বছর হকি খেলেছি। এছাড়াও হকির যেকোনো আয়োজন বা প্রয়োজনে আমি সবসময়ই ছিলাম। তো আমার হকির প্রতি এই কমিটমেন্ট থেকেই আমার মুরুব্বী, সতীর্থ খেলোয়াড়, বন্ধু-বান্ধবদের অনুরোধ এবং বাংলাদেশ হকির উন্নয়নে আমার চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।

আমি হকি ভালোবাসি। একটা সময় জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বাংলাদেশে ফুটবলের পরই ছিল হকির অবস্থান। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আমাদের হকির সেই স্বর্ণালী যুগ এখন আর নেই। কিন্তু এই খেলাটির প্রতি আমার মতো সারাদেশে আরো অনেকের ভালোবাসা আছে, ভালো লাগা আছে। সেই ভালো লাগা, ভালোবাসাটুকু সাথে নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে আমি বিশ্বাস করি হকির সুদিন আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আমাদের বর্তমান নির্বাচিত কমিটি সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

আরেকটা বিষয় আমি যোগ করতে চাই তা হলো দেশে এখন প্রায় ৭০ ভাগ যুব সম্প্রদায় রয়েছেন। তাদেরকে হকি সহ ক্রীড়াঙ্গনের অন্যান্য খেলাধুলার সাথে যুক্ত করে একটি উজ্জীবিত, মাদকমুক্ত যুব সমাজ তৈরি করাও আমার অন্যতম লক্ষ্য।

জাগো নিউজ : কোটি কোটি মানুষের কাছে আপনি আজও জনপ্রিয় সেই মডেল ফয়সাল। অনেকদিন কোনো কাজে নেই। আর কখনো কী ফেরা হবে না শোবিজে?

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : আমি আসলে নিজেও জানি না। শোবিজ আমাকে পরিচিতি দিয়েছে দেশের মানুষের কাছে। আমি নিজের ক্যারিয়ার ও কাজ নিয়ে তৃপ্ত। যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি এবং আজও পাই তার কোনো বর্ণনা দেয়া যায় না। এখন তো নানা রকম বিষয়ে জড়িয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে। এসবের ফাঁকে হয়তো আর কখনো সুযোগ হবে না শোবিজে কাজ করার। তবে যেহেতু এই জায়গাটির প্রতি আমার ভালোবাসা আছে তেমন বিশেষ কিছু হলে যা সমাজকে কোনো ইতিবাচক বার্তা দেয় তবে করতেও পারি।

জাগো নিউজ : ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেয়ার জন্য।

মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ : আপনাদেরকেও ধন্যবাদ আমাকে কথা বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। আমি সবার কাছে দোয়া চাই যেন সুস্থ থেকে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারি।

এলএ/এমএবি/এমকেএইচ