জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ উল্লেখ করে মানবিক বিবেচনায় তার জামিন দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। একই সঙ্গে বয়স্ক নারীর বিষয়টিও জামিনের বিষয়ে বিবেচনা আনার দাবি জানান তিনি। এছাড়া খালেদার জামিনের বিষয়ে পাকিস্তানের একটি উদাহরণ টেনে আনেন।
Advertisement
পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে খালেদার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, পাকিস্তান বর্বর রাষ্ট্র হলেও নওয়াজ শরীফকে লন্ডনে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে।
আদালতকে তিনি বলেন, ‘উপরে আল্লাহ আর আপনারা ছাড়া আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই, তাই বার বার আপনাদের কাছেই আসি।’
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য আইনজীবীদের অনুমতি দেয়া হয় না। তার আত্মীয় স্বজনরা দেখা করার পর আমাদের জানিয়েছেন যে, তিনি (খালেদা জিয়া) দাঁড়াতে পারেন না। তার বাম হাত নাড়াতে পারেন না। তিনি মারাত্মক অসুস্থ। শরীর খুব খারাপ।
Advertisement
খবরের কাগজের বরাত দিয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন। পালিয়ে যাবেন না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’র বিষয়টি আলোচনায় আসে। এক পর্যায়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘মাই লর্ড, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা এমন যে, তার শরীরে মেডিসিন পুশ করা যাচ্ছে না। এভাবে আর ছয় মাস পর হয়ত সে লাশ হয়ে বের হবেন। তাই আমরা মানবিক বিবেচনায় জামিনের জন্য আপনাদের কাছে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তকেও জামিন দিয়েছেন। আপনাদের এই আদালতেরই সিদ্ধান্ত আছে নারী ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে জামিন বিবেচনা করার। উনি অসুস্থ, হাঁটা চলা করতে পারেন না। উনি তো আর পালিয়ে যাবেন না। তাই ওনাকে মানবিক বিবেচনায় জামিন দেয়া হোক।’
Advertisement
এরপর আদালত ১১টার দিকে বিরতিতে যান। তখন এজলাস ছাড়ার আগে প্রধান বিচারপতি বলে যান, ‘আমরা আসছি’ চেয়ার ছেড়ে যান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল প্রতিবেদন পৌঁছানো হয়। পরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে রেজিস্টার জেনারেল মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতের কাছে জমা দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে খালেদার পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জয়নুল আবেদীন শুনানি করেন। যদিও এ জামিন আবেদনের শুনানিতে দুইপক্ষের ৩০ জন করে মোট ৬০ জন আইনজীবী থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল, তবে শুনানির সময় আদালতে দুইপক্ষের শত শত আইনজীবী উপস্থিত রয়েছেন।
এফএইচ/আরএস/জেআইএম