বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বর্তমান প্রজন্মের মহানায়ক প্রসেনজিৎ চট্টপাধ্যায়। টালিউডের ‘মিস্টার ইন্ডাস্ট্রি’ তিনি। অনেকে বুম্বাদা বলেও ডাকেন। আজ তার জন্মদিন। ১৯৬২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জন্মেছিলেন তিনি। হিসেবমতে এবারে ৫৩ বছরে পা রাখলেন। জানা গেছে, নিজের জন্মদিন তিনি এবার দিল্লীতে পালন করছেন। নিজের ছবির প্রচার এবং টালিউডের উন্নয়নের পরিকল্পনায় মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকলেন সারাটাদিন।রাজধানীতে প্রসেনজিত অভিনীত ছবির রেট্রোস্পেক্টিভ শেষ হয়েছে মঙ্গলবার৷ এর পরই ছিল তার জন্মদিনের পার্টি। শুধু জন্মদিন দিন নয়, মাঝরাতের ওই পার্টিতেই মিশে ছিল মুক্তির অপেক্ষায় থাকা তার ছবি ‘শঙ্খচিল’ নিয়ে উচ্ছ্বাস। সেখানে হাজির ছিলেন প্রসেনজিতের স্ত্রী অভিনেত্রী অর্পিতা পাল, পরিচালক মহেশ ভাট, শঙ্খচিলের পরিচালক গৌতম ঘোষ, অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত প্রমুখ।তবে শুধু জন্মদিনের পার্টি-ই নয়, রাজধানী শহরে টাটকা বাংলা সিনেমার উৎসব যাতে ফুরিয়ে না যায় তা নিয়েও উদ্যোগী হলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়৷ সে কারণেই দিল্লি বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের সঙ্গে বসলেন আলোচনায়৷ সেখানে প্রসেনজিৎ জানান, অধিকাংশ প্রযোজনা সংস্থাই কলকাতার সঙ্গে সঙ্গে দিল্লিতেও বাংলা ছবি মুক্তি নিয়ে তৎপর নন৷ ফলে অধিকাংশ ছবিই ঠিক সময়ে পৌঁছয় না দিল্লিতে থাকা বাঙালিদের কাছে৷ এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। বাংলা ছবিই প্রসেনজিতের ধ্যান-জ্ঞান! শিশু শিল্পী হয়ে অভিনয়ের দুনিয়ায় পা রাখা প্রসেনজিতের অভিনয়ের আঙিনায় কেটে গেছে চার দশক। ১৯৬২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রসেনজিৎ। শিশু শিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন বাবা বিশ্বজিৎ পরিচালিত ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ছোট্ট ‘জিজ্ঞাসা’তে। নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় ১৯৮৩ সালে ‘দুটি পাতা’ ছবিতে। একজন রোমান্টিক নায়ক হিসেবে প্রথম ছবিতেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। এরপর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।অমর সঙ্গী, প্রতিশোধ, শত্রু, জীবন মরণ, আতঙ্ক, দোলন চাঁপা, কালপুরুষ, উনিশে এপ্রিল, অটোগ্রাফ, লাঠি, চোখের বালি, অটোগ্রাফ, মনের মানুষ, জাতিস্মরসহ প্রায় আড়াই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও দেখা গিয়েছে তাকে।সুদীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি কুড়িয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা, ভক্তদের মন উজাড় করা ভালবাসা আর সম্মাননাস্বরূপ অসংখ্য পুরস্কার। তন্মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্টার ডাস্ট পুরস্কার, মহানায়ক সম্মাননা, মিরচি মিউজিক এ্যাওয়ার্ড, আনন্দলোক পুরস্কার, জি গৌরব অ্যাওয়ার্ড, বিগ বাংলা মুভি অ্যাওয়ার্ড, স্টার জলসা ইন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, কালাকর অ্যাওয়ার্ড, বিএফজেএ পুরস্কার, সঙ্গীত সিনে অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য। প্রসেনজিৎ বিখ্যাত বাংলা এবং হিন্দি ছবির নায়ক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়-এর একমাত্র পুত্র। তার বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায় নিজেও একজন অভিনেত্রী। মা রতনা চট্টোপাধ্যায় ছিলেন গৃহিণী।প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী ১৯৯২ সালে বিয়ে করেন বিখ্যাত অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়কে। তিন বছর সংসার করার পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর জীবনসাথী করেন ১৯৯৭ সালে অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে। কিন্তু অজানা কারণে সে বিয়েও বেশিদিন টেকেনি। অতঃপর ২০০২ সালে অভিনেত্রী অর্পিতা পালকে বিয়ে করে তিনি শুরু করেন জীবনের আরেক নতুন ইনিংস। বর্তমানে প্রসেনজিৎ-অর্পিতা দম্পতির ত্রিশেনজিৎ নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে।অভিনয় দক্ষতার বদৌলতে কোটি দর্শকের অন্তরে তিনি বেঁচে রইবেন। শুভ হোক তার আগামীর পথচলা। জয় প্রসেনজিৎ, জয় বাংলা সিনেমা।এলএ/পিআর
Advertisement