দেশজুড়ে

লাশের মিছিলে যুক্ত হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরো দুই হাজি

সৌদি আরবের মিনা ট্রাজেডির ঘটনায় হাজিদের লাশের মিছিলে প্রায় প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাজিদের নাম। লাশের এই মিছিলে সর্বশেষ যুক্ত হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার আরো দুই হাজি। নিহত হাজিরা হলেন, নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের বালিখলা গ্রামের মৃত সাইজ উদ্দিনের ছেলে মো. আসাদুল্লাহ (৭০) ও তার ভগ্নিপতি এবং একই গ্রামের মৃত এলাজ উদ্দিনের ছেলে মো. ছিদ্দিক মিয়া (৬৫)। এ ঘটনায় মো. আসাদুল্লার স্ত্রী সাহারা বেগম (৬৫) এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। এ নিয়ে মিনা ট্রাজেডির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬ জন হাজি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।নিহত আসাদুল্লা ও ছিদ্দিক মিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার বিজয়নগর এলাকার হাজরে আসওয়াত হজ্জ অ্যান্ড ট্রাভেল ট্যুরস এজেন্সির মাধ্যমে আসাদুল্লাহ ও তার স্ত্রী সাহারা বেগম ও ছিদ্দিক মিয়াসহ বালিখলা গ্রামের বেশ কয়েকজন হজ পালনের উদ্দেশ্যে গত ৩০ আগস্ট সৌদি আরব রওয়ানা হন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের মিনায় ‘শয়তান স্তম্ভে’ পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে পদদলিত হওয়ার সময় তারা সবাই এক সঙ্গেই ছিলেন। মিনা ট্রাজেডির পর থকেই তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় সৌদি আরব প্রবাসী আসাদুল্লার ছেলে নেহ আলম গ্রামের বাড়িতে ফোন করে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।আসাদুল্লার ছেলে মো. জসিম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় আমার বাবার (আসাদুল্লা) মরদেহ মক্কাতেই দাফন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আমারা মা (সাহারা বেগম) এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাই আমি আমার মাকে জীবিত ফেরত পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।ছিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ফাতেমা বেগম জাগো নিউজকে জানান, মিনা ট্রাজেডির দিন সকালে তার বাবার সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সর্বশেষ কথা হয়েছিল। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে টেলিভিশনের মাধ্যমে মিনা ট্রাজেডির ঘটনা জানতে পেরে সৌদি আরব থাকা তার ভাই মেসাব্বিরকে বাবার খোঁজ নিতে বলেন। এরপর সোমবার রাতে মোসাব্বির মিনা ট্রাজেডির ঘটনায় তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি গ্রামের বাড়িতে জানান।এ ব্যাপারে ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম বাকি বিল্লাহ জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, হাজিদের মৃত্যুর বিষয়টি জানার পর তিনি নিয়মিত তাদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তবে নিহত হাজিদের পরিবারের সদস্যদেরকে সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।উল্লেখ্য, মো. আসাদুল্লা ও মো. ছিদ্দিক মিয়া ছাড়াও ইতোমধ্যে মিনা ট্রাজেডির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও নাসিরনগর উপজেলার ৪ হাজির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন, কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা (৫৫), খাড়েড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূইয়ার ছেলে জাহেদুল ইসলাম ভূইয়া (৪০), নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের বালিখলা গ্রামের মৃত আলীম উদ্দিনের মেয়ে আমেনা বেগম (৫০) ও তার চাচাতো বেন হাসেনা খাতুন (৬০)।আজিজুল আলম সঞ্চয়/ এমএএস/পিআর

Advertisement