নেদারল্যান্ডসে আজ বুধবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানির শুরুতেই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে গাম্বিয়া যে মামলা করেছে তাকে অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রতিনিধি দলের প্রধান অং সান সু চি।
Advertisement
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলেন, দুঃখজনকভাবে রাখাইনের অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর চিত্র উপস্থাপন করেছে গাম্বিয়া। বক্তব্যের শুরুতে সু চি আন্তর্জাতিক আইন ও সনদসমূহের বাধ্যবাধকতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গণহত্যার উদ্দেশে সামরিক অভিযান পরিচালনার অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার শুরু হয়েছে তার দেশে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এ মামলার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে যখন তার দেশ (মিয়ানমার) বিচার করতে কিংবা ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হবে শুধু তখনই আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এর বিচার করতে পারবে। তার দেশে তো এখন বিচার চলছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তিনি বলেন, আমরা আদালতের কাছে আর্জি জানাই তারা যেন এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকে, যা রাখাইনের বর্তমান সহিংস পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করে তোলে। তিনি রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতির জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেন।
Advertisement
অং সান সু চি তার দেশের সামরিক বাহিনীর অভিযানের বৈধতা দিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, সব জায়গায় ক্লিয়ারেন্স অপারেশনকে (নিধন অভিযানকে) ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুধু সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলার প্রশ্নে ব্যবহৃত হয়েছে। আর দায়িত্বে ছিল নিরাপত্তা বাহিনী।
তবে রাখাইনের পরিস্থিতি জটিল এবং রোহিঙ্গারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন সু চি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার তিনদিনের শুনানির প্রথম দিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পল এস রাইখলার আদালতের কেন অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের নির্দেশনা দেয়া উচিত, সে বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
রাখাইনে গণহত্যা, ধর্ষণ ও মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের বিতাড়িত করা নিয়ে তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন তদন্ত ও প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বসনিয়ার ক্ষেত্রে যতটুকু তথ্যের ভিত্তিতে আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশনা দিয়েছেন, মিয়ানমারের অবস্থা তার চেয়েও খারাপ।
মিয়ানমারের নেত্রী আদালতকে বলেন, যেসব সেনার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ (গণহত্যা) প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এমন কোনো কাজ করে; যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। তাহলে দেশের সংবিধান অনুযায়ী তাদের বিচার হবে।
Advertisement
এসএ/এমকেএইচ