বিদেশি নাগরিক তেভেল্লা সিজার খুনের ঘটনায় কূটনৈতিক চাপে পড়েছে সরকার। যদিও সরকার এটিকে বিএনপি জামায়াত জোটের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। সোমবার রাজধানীর গুলশান কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইতালির নাগরিক তেভেল্লা সিজার। খুনের ঘটনাটি ভালোভাবে নেয়নি ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাস। ঢাকার বেশির ভাগ কূটনীতিক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা যেমন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা নিজেদের নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা জারি করেছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ডাচ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা এ ঘটনার পর বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। দূতাবাসগুলো তাদের নাগরিকদের ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে চলাচলে সর্তক থাকতে বলেছে। শুধু তাই নয়, অপ্রয়োজনে বাইরে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে নাগরিকদের।বিশ্লেষকরা বলছেন, সিজার হত্যাকাণ্ডে সরকারের ওপর কূটনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকেও স্পষ্ট।প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে বলেছেন, সিজার হত্যার পর ঢাকায় বিদেশি নাগরিকদের চলাচলে সর্তকতা জারি দুঃখজনক। দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। একই সঙ্গে এ ঘটনার জন্য তিনি বিএনপি জামায়াত জোটকে দায়ী করেছেন। এছাড়া জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। অধিবেশন শেষে ঢাকায় ফিরে কূটনৈতিকরা আলাদাভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের উদ্বেগের কথা জানাবে বলে জানা গেছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জাগো নিউজকে মঙ্গলবার বলেন, আমরা এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখতে চাই। কিন্তু অস্ট্রোলিয়ার ক্রিকেট দল নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশ সফরে আসতে অস্বীকৃতি জানানোর পরের দিন এমন একটি ঘটনা সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী জাগো নিউজকে বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় সরকারকে কূটনৈতিকভাবে অনেক চাপে পড়তে হবে। এছাড়া গত ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই এই সরকারকে রাজনৈতিক কারণে হলেও চাপে রাখবেন তারা।প্রবীণ এই রাষ্ট্র বিজ্ঞানী আরো বলেন, বর্তমান সরকারের বৈধতা সর্ম্পকে বিদেশিরা খুব ভাল করেই জানেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো। কিন্তু সরকার কারো কথায় কর্ণপাত করেনি। তাই সিসারে তাভেল্লাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সরকারকে বিদেশিরা নানাভাবে চাপে রাখবেন বলে মনে করেন তিনি। তবে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, সিজার হত্যার ঘটনায় কূটনৈতিকভাবে কোন চাপে পড়বে না। কেননা যে কোনো দেশে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তাই বলে সরকার চাপে পড়বে এমনটা হতে পারে না। তবে এই ঘটনার সঠিত তদন্ত হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসএ/এমএম/এএইচ/পিআর
Advertisement