মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যার দায়ে দায়েরকৃত মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে। বুধবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে এ শুনানি শুরু হয়। গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলার শুনানির জবাবে অংশ নিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলেন, দুঃখজনকভাবে রাখাইনের অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর চিত্র উপস্থাপন করেছে গাম্বিয়া।
Advertisement
বক্তব্যের শুরুতে সু চি আর্ন্তজাতিক আইন ও সনদসমূহের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, গণহত্যার উদ্দেশে অভিযান পরিচালনার অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন কোনোভাবেই মেনে নেবে না আমাদের সরকার। যখন দেশের বিচার ব্যবস্থা ব্যর্থ হবে, শুধু তখনই আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এর বিচার করতে পারবে।
তিনি বলেন, যেসব সেনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এমন কোনো কাজ করে থাকে; যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। তাহলে দেশের সংবিধান অনুযায়ী তাদের বিচার হবে।
রাখাইন পরিস্থিতি জটিল এবং রোহিঙ্গারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন সু চি।
Advertisement
মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে জাতিসংঘের শীর্ষ এই আদালতে সাবেক গণতন্ত্রের প্রতীক সু চিকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানায় মামলার বাদী আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন করে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন সু চি; কিন্তু এখন সেই সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়েই গণহত্যার দায় এড়াতে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রক্তাক্ত এক সামরিক অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রক্তাক্ত এই অভিযানে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও চালানো হয়। প্রাণে বাঁচতে সেই সময় রোহিঙ্গাদের ঢল নামে প্রতিবেশী বাংলাদেশে।
পশ্চিম আফ্রিকার ক্ষুদে মুসলিম দেশ গাম্বিয়া ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদের উৎসাহে গণহত্যার দায়ে মামলা করে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে তোলে।
এসআইএস/এসএ/জেআইএম
Advertisement