ক্যাম্পাস

নেশাগ্রস্ত রাব্বানী আমার পদত্যাগ চেয়ে হাসির জন্ম দিয়েছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীকে ‘নৈতিকভাবে পরাজিত’ উল্লেখ করে ছাত্র সংসদটির সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেনে, নেশাগ্রস্ত রাব্বানী আমার পদত্যাগ চেয়ে হাসির জন্ম দিয়েছেন।

Advertisement

নুর বলেন, ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী আজ (রোববার, ৬ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পদত্যাগ দাবি করেছেন। অথচ টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদকাসক্তির অভিযোগে তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জিএস পদ থেকে তাকে সরানোর দাবি করেছিল শিক্ষার্থীরা। ডাকসুর নিয়ন্ত্রণ রাখতেই তিনি পদত্যাগ করেননি। অথচ এখন ফের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন তিনি।

নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক ও নৈতিক স্খলন’র অভিযোগ তুলে তাকে ডাকসুর ভিপি পদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে দুপুরে ডাকসুর কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করেন রাব্বানী।

সেখানে ডাকসুর জিএস বলেন, ‘আমরা ডাকসু পরিবার এই অপকর্মের দায়ভার নিতে চাই না। নুর যদি পদত্যাগ না করেন, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আহ্বান জানাই, যেন দ্রুত তাকে বহিষ্কার করে ডাকসুকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়।’

Advertisement

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নুর জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটি ফোনালাপ ফাঁস করে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেখানে বিন্দুমাত্র তথ্য নেই যে, আমি অবৈধভাবে লেনদেন করেছি। মূলত ছাত্রলীগ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ইস্যু তৈরি করতে চাইছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে এবং তা করা হচ্ছে সরকারনিয়ন্ত্রিত মিডিয়াকে হাত করে।’

সম্প্রতি ডাকসুর ভিপি নুরের ফোনালাপ নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। ফোনালাপে নুরের তদবির ও আর্থিক লেনদেনের তথ্য প্রকাশ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় খবরে। তবে নুর দাবি করেন, ওই সংবাদমাধ্যমগুলো তার ফোনালাপের অংশবিশেষ তুলে ধরে খবর প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তিনি তিনটি সংবাদমাধ্যমকে এজন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান, অন্যথায় আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

ফোনালাপ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘একজন অপরিচিত মানুষ ফোনে কথা বলতেই পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ফোনে আমার জবাব কী ছিল? আমি সরাসরি তার আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছি। কার সঙ্গে কী বিষয়ে আলাপ হয়েছিল, সরকার বা মিডিয়া তার তথ্য দিয়ে প্রমাণ করুক সাহস থাকলে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে পারে। রাষ্ট্র, দুদক তদন্ত করতেই পারে। রাজনৈতিক বিরোধিতার জায়গা থেকে শুধু এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’

ডাকসুর ভিপি বলেন, ‘শুধু ছাত্রলীগ নয়, ঢাবির যে কোনও শিক্ষার্থী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে অবশ্যই পদত্যাগ করবো। পদত্যাগ চাইতে হবে না। প্রমাণ দিলেই পদত্যাগ করবো।’

Advertisement

ছাত্রলীগ কেন ষড়যন্ত্র করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে নুর বলেন, ‘নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের মাধ্যমে সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে স্বৈরতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ছাত্রসমাজ সরকারের এই আচরণের বিরোধিতা করছি। ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করে আসছি। আবরার হত্যাসহ বিভিন্ন শিক্ষার্থী হত্যার বিচার চেয়ে আমরা যখন মাঠে থাকছি, তখন সরকার ভীতিসন্ত্রস্ত হয়ে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগ এখন অস্তিত্ব সংকটে। বুয়েটের দেয়াল থেকে ছাত্রলীগের নাম মুছে দেয়া হয়েছে। ঢাবির শিক্ষার্থীরাও এখন ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। অস্তিত্ব হারানোর ভয়েই তারা এখন মরিয়া হয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’

টেন্ডার আলোচনায় আপনার নাম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডাকসুর ভিপি বলেন, ‘দেশে প্রতিনিয়ত ফোনালাপ ফাঁস হচ্ছে। আমি জানি, সরকার-গোয়েন্দারা আমার প্রতিটি বিষয়ে নজরদারি রাখছে। আমি প্রতিমুহূর্তে সতর্ক থাকছি। সুতরাং ফোনালাপ নিয়ে আমার মধ্যে কোনও দ্বিধা নেই। কারণ আমি টেন্ডারের বিষয় নিয়ে কোনও আলাপ করিনি। একটি কাজের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমার পরিচিত কারও জন্য সহায়তার চেষ্টা করতেই পারি।

এএসএস/এইচএ/জেআইএম