মালয়েশিয়ার অতিরিক্ত ফ্লাইট বাড়লেও কমেনি বিমান ভাড়া। শুধু যাওয়ার টিকিটই এখন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার রিঙ্গিত। কোনো রকম হয়রানি ছাড়া কমমূল্যে এয়ার টিকিট বিক্রির প্রস্তাব রাখলেও কমেনি ভাড়া।
Advertisement
১৪ ডিসেম্বর থেকে কুয়ালালামপুর টু ঢাকা চালু হচ্ছে বিমানের অতিরিক্ত ফ্লাইট। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে রোববার এক নোটিশ প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ফ্লাইট-কুয়ালালামপুর টু ঢাকা, ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচির সুবিধা নিয়ে দেশে ফিরে যেতে বাংলাদেশ সরকার আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অতিরিক্ত ১৬টি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে। ফ্লাইটের টিকিট মূল্য ইকোনমি লাগেজ ছাড়া ১২৯৪ রিঙ্গিত; লাগেজসহ ১৭৪৪ রিঙ্গিত। বিজনেস ক্লাস ২৪২৪ রিঙ্গিত এবং ২৯২৯ রিঙ্গিত।
টিকিট কাটতে কোনো সমস্যা হলে হাইকমিশনের নিম্ন লিখিত টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ৬০১২২৯০৩২৫২, +৬০১২২৯৪১৬১৭, +৬০১২৪৩১৩১৫০ এবং বিমান অফিস +৬০১২২৭৩৬৬৭৬। মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বিমানের সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি চালাচালির মাধ্যমে দেশটি থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ১৪ ডিসেম্বর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা টু মালয়েশিয়া রুটে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৬টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
Advertisement
চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচি। ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচি এখন শেষ পর্যায়ে। এয়ার টিকিট না থাকায় আবেদন জমা করতে পারেননি অনেকে। বিমানের টিকিটের বিষয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন, শুধু একবারের টিকিটই এখন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার রিঙ্গিত। কোনোরকম হয়রানি ছাড়া কমমূল্যে এয়ারলাইন্স টিকিট বিক্রির প্রস্তাব রাখলেও কমেনি বিমান ভাড়া।
ফ্লাইট সিডিউল বাড়ালেও কেন ভাড়া কমবে না প্রশ্ন ছুড়েছেন প্রবাসীরা। তাদের দাবি এক বেলার টিকিট ৭০০ থেকে ১০০০ হাজারের মধ্যে করতে হবে। এদিকে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে ৬টি এয়ারলাইন্স। দেশীয় এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ ও ইউএস-বাংলা, রিজেন্ট এয়ারলাইন্সের ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট রয়েছে।
অন্যদিকে বিদেশি এয়ারলাইন্সের মধ্যে ফ্লাইট রয়েছে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, মালিন্দো এয়ার ও এয়ার এশিয়ার। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশনস) মো. কামরুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে ১৫, ১৭ ও ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা-কুয়ালালামপুর ও কুয়ালালামপুর-ঢাকায় ১৬, ১৮ ও ২০ ডিসেম্বর তিনটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া প্রতারণা থেকে সাবধান হতে এবং যে কোনো এজেন্ট বা ভেন্ডরের সঙ্গে টাকা লেনদেন না করার জন্য মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা এক নোটিশের মাধ্যমে সতর্ক করেছেন। দূতাবাসের নোটিশে বলা হয়েছে, ট্রাভেল পারমিট এবং স্পেশাল পাস সম্পূর্ণ আলাদা। স্পেশাল পাস দেয় মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন। ট্রাভেল পারমিট (টিপি) দেয় বাংলাদেশ হাইকমিশন।
Advertisement
জমা দেয়ার সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। বিতরণ বিকাল ৪-৫টায় নিজে উপস্থিত হয়ে টিপির আবেদন জমা দিতে হবে এবং গ্রহণ করতে হবে। যোগাযোগ নং টিপি সম্পর্কিত তথ্যের জন্য ফোন +৬০১০২৪৯৭৬৫৭; +৬০১২৪৩১৩১৫০; +৬০১২২৯৪১৬১৭; +৬০১২২৯০৩২৫২।
এদিকে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র জানায়, সম্প্রতি মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতো ইনদিরা খায়রুল জাইমি দাউদের সঙ্গে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠক করেন।
ব্যাক ফর গুড কর্মসূচিতে বাংলাদেশের কর্মীদের এ সাড়া প্রদানকে হাইকমিশনারের কাছে উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করেন তিনি। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় বাংলাদেশের অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি, ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের জন্য যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত নিশ্চিতকরণ; ছাত্র, প্রফেশনাল ও শ্রমিকদের ভিসা রিনিউ প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশিদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় আরও সহায়তা প্রদানসহ অন্যান্য বিষয়াদি প্রাধান্য পায়।
দেশটির সংশ্লিষ্ট দফতরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সালের ১ আগস্ট থেকে ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচি শুরু করে মালয়েশিয়া সরকার। সর্বশেষ সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচির আওতায় ৩১ শে ডিসেম্বর ২০১৯ সমসীমার মধ্যে ১,১১,০০০ এরও বেশি অনিবন্ধিত অভিবাসী স্বেচ্ছায় মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজ নিজ দেশে চলে যাবে বলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এমআরএম/পিআর