সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুলে যেতে চাইবেন পাকিস্তান ক্রিকেটের যেকোনো ভক্ত-সমর্থক। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ০-২ ব্যবধানে হার, পরে টেস্ট সিরিজের দুই ম্যাচেই ইনিংস ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশের তেতো স্বাদ- অস্ট্রেলিয়া সফরটা ঠিক এমনই কেটেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের।
Advertisement
এ সফরটিকে পাকিস্তান ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা যতই ভুলতে চান না কেন, দুঃস্বপ্নের মতো প্রতিনিয়তই হানা দেবে তাদের মনে। যেমনটা আলোচনা হচ্ছে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেও। স্বাগতিক হিসেবে লঙ্কানদের বিপক্ষে পাকিস্তান ফেবারিট হলেও, অস্ট্রেলিয়া সফরে ভরাডুবি যেনো কোনোভাবেই ভোলা সম্ভব হচ্ছে না।
তাই তো আগামী বুধবার থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে বারবার ঘুরেফিরে আসছে সেই সফরের কথা। যাতে বারবার সমালোচনা ও প্রশ্নের তীরে বিদ্ধ হচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। যেখানে দলের টেস্ট অধিনায়ক আজহার আলি অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া সফরে তাদের গর্বে আঘাত লেগেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আসন্ন সিরিজের ব্যাপারে কথা বলার আগে বিগত মিশনের ব্যাপারে আজহার বলেন, ‘আমরা গর্বিত ক্রিকেট জাতি। নিশ্চিতভাবেই আমাদের গর্বে আঘাত লেগেছে। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেরা প্রস্তুতিটাই নিয়েছিলাম। সেখানে আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশামতো ফলাফল আসেনি।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যখন অস্ট্রেলিয়া খেলতে যান এবং নিজের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন, তখন ঘুরে দাঁড়ানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। আমাদের বোলিং আক্রমণ খুবই তরুণ ছিলো এবং আশানুরূপ খেলতে পারেনি। তবু দেখেন, বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের নিয়ে আলোচনা চলছে। তাদের যথেষ্ঠ গতি আছে। এর সাথে অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে পাকিস্তানের ভবিষ্যতের জন্যই ভালো হবে।’
পাকিস্তান অধিনায়ক নিজেও ভালো খেলতে পারেননি অস্ট্রেলিয়া সফরে। চার ইনিংসে তিনবারই ফিরেছেন দুই অঙ্কে পৌঁছার আগে। সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি মাত্র ৩৫ রানের। অথচ দিবারাত্রির টেস্টে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হওয়ায়, অ্যাডিলেডে তার ওপর ছিলো একটু বেশি নির্ভরতা ও প্রত্যাশা। যা মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন আজহার।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি যে, হাঁটুর ইনজুরির পর আমার পারফরম্যানস আগের মতো নেই। আমি সব ফিটনেস্ট টেস্ট পাস করেছি। সবধরনের ব্যায়ামও করেছি। তবে এটাই (ইনজুরি) একমাত্র কারণ নয়। অনেক খেলোয়াড়েরই সার্জারি হয় এবং তারাও খেলে যায়। আমার যদি ফিটনেস সমস্যা হতো, তাহলে বোর্ডই সেটা জানাতো। আমি বুঝতে পারছি যে, রান করতেই হবে। সে জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। নেটে ভালো ব্যাটিং হয়। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত ফলটা পাচ্ছি না।’
অস্ট্রেলিয়া সফরটা অধিনায়ক হিসেবে, ব্যাটসম্যান হিসেবে অথবা দল হিসেবে খারাপ কাটালেও; সে স্মৃতি ভোলার সুযোগ পেয়ে গেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আশানুরূপ পারফরম করতে পারলেই মিলবে স্বস্তি।
Advertisement
আজহার বলেন, ‘আমাদের পরের সিরিজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। যেটা আমাদের জন্য ঐতিহাসিকও বটে। দলের সবাই প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে টেস্ট খেলবো। শ্রীলঙ্কা তাদের পূর্ণশক্তির দল নিয়ে আসছে। তাদের হারানোর জন্য আমাদের সেরা ক্রিকেটই খেলতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টাই করবো আমরা।
এসএএস/এমএস