বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা জানাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্য দেয়া নির্দেশের কপি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল (বিএসএমএমইউ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছেছে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।
Advertisement
তিনি জানান, খালেদার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা জানাতে মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্য দেয়া নির্দেশের কপি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের কাছে সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে পৌঁছেছে।
আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এই রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। এদিন আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গত ২৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে বলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর মেডিকেল বোর্ডকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে শুনানিতে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, বয়স ও মানবিক দিক বিবেচনার কথা জানিয়ে তার জামিনের আরজি জানান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গত ৭ অক্টোবর একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়। ৩০ অক্টোবর বোর্ডের প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে আদালতকে জানান জয়নুল আবেদীন। অনানুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া এই প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার উন্নত থেরাপির কথা বলা আছে বলে দাবি করেন জয়নুল আবেদীন। এ অবস্থায় আদালত বলেন, তাহলে আমরা একটা রিপোর্ট কল করি। পরে আদালত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দেন।
Advertisement
গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক। রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা বাতিল ও খালাস চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া। এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে, ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে দেয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এছাড়া বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটির নথি তলব করেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে নথি পাঠাতে বলা হয়।
বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি গত ২০ জুন হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে তুলে ধরেন তার আইনজীবীরা।
শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ জুলাই জামিন আবেদন খারিজ করেন। পরে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে তার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
দুর্নীতির পৃথক দুটি মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রয়েছেন।
এফএইচ/এসআর/জেআইএম