পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ক্লাস চলাকালীন সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুল মাঠে মাটি ভরাটের কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
সরেজমিনে গতকাল ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাস চলাকালীন সময় এক সহকারী শিক্ষিকা ও দপ্তরি দাঁড়িয়ে থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুল মাঠে মাটি ভরাটের কাজ করতে বাধ্য করছেন। এসময় স্কুল ড্রেস পড়া ২০ থেকে ৩০ জন কোমলমতি শিশুর মধ্যে বেশ কয়েকজন মাটিতে ধরমুজ (কাঠের ভারি বস্তু) করছে। কেউ কেউ মাথায় ঢাকি বহন করে মাঠে মাটি ফেলছে। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কেউ রাজি হয়নি। এ ঘটনায় ওই সহকারী শিক্ষিকাসহ অন্য শিক্ষকরাও কথা বলতে রাজি হয়নি। এ বিষয়ে স্কুলের দপ্তরি নিতেশ জাগো নিউজকে বলেন, আমি একা কাজ করছি। আমিতো বসে নেই। আমি শিশুদের দিয়ে কাজ করাইনি। বাচ্চারা কাজ করছে সেটা তাদের ব্যাপার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানান, প্রধান শিক্ষক স্থানীয় প্রভাবশালীর স্ত্রী। স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় প্রায় ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে নানান কাজ করান তিনি। ওই স্কুলে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর বোন সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করার সুবাদে সকলকে ম্যানেজ করে চলেন তিনি। কাজের ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত হয় না।
এ বিষয়ে আটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসরাত জাহান জানান, আমি গলাচিপা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সমাপনীর খাতা দেখায় ব্যস্ত, আপনি এখানে এসে কথা বলেন। প্রধান শিক্ষকের কথা অনুযায়ী বেলা ১১টায় গলাচিপা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে তিনি বলেন, বর্ষার সময় আমরা অনেক কষ্ট করে চলেছি তখন তো কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। আজ আমি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ফেলেছি এ নিয়ে সমস্যা?
Advertisement
তিনি আরও বলেন, সকল শিক্ষক ও দপ্তরি নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে এবারের মতো ক্ষমা করে দেন। তাছাড়া সংবাদ প্রকাশ হলেও কিছু হবে না। এ সময় গলাচিপা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেখা হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর রেজাউল ইসলামের সঙ্গে। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এ ঘটনায় পটুয়াখালী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইয়েদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, এরকম কাজ করার কোনো নিয়ম নেই। তবে একটা আইন আছে প্রতি বৃহস্পতিবার সকল ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে সমস্ত স্কুল ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম করবে। এরকম নির্দেশনা রয়েছে মাটির কাজ করানোর কোনো নির্দেশনা নেই। মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএএস/এমকেএইচ