বিনোদন

হুমায়ূন স্যারের গল্পে কাজ করাটা স্বপ্ন ছিলো

অনেক দিনের ঝুট ঝামেলা কাটিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। তার পিছনে যেসব নায়িকার অবদান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একজন মাহিয়া মাহি। জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরে ২০১২ সালে ঢাকাই চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন হালের এই ক্রেজ। এরপর দর্শকদের উপহার দিয়েছেন একের পর এক দর্শক নন্দিত ছবি। বর্তমানে মাহি বাংলাদেশের শীর্ষ স্থান দখল করা অভিনেত্রী।চারপাশে নতুন খবর ভাসছে, প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ নামের ছবিতে রিয়াজের বিপরীতে কাজ করতে যাচ্ছেন মাহি। এটি পরিচালনা করবেন মেহের আফরোজ শাওন। ছবিটি সম্পর্কে চিত্রনায়িকা মাহি কথা বললেন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগে। সঙ্গে ছিলেন নাহিয়ান ইমন জাগো নিউজ : কৃষ্ণপক্ষ নামের নতুন ছবিতে কাজ করছেন শুনলাম...মাহি : ঠিক তাই। এখন পর্যন্ত প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। শাওন আপা আমাকে চয়েজ করেছেন। পাশাপাশি শুনছি আমার বিপরীতে রিয়াজ ভাই কাজ করবেন। আমারো অনেক দিনের ইচ্ছে হুমায়ূন স্যারের কোনো চরিত্রে কাজ করা। হয়তো সেটি সত্য হতে চলেছে। জানিনা, নিজেকে কতোটা মেলে ধরতে পারবো, তবে আমি চেষ্টা করবো যারা স্যারের ভক্ত-অনুরাগী ও দর্শক তাদের মন জয় করতে।জাগো নিউজ : কৃষ্ণপক্ষ উপন্যাসটি পড়েছেন? মাহি : হ্যাঁ। আমি হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠক। উনার সব গল্প-উপন্যাসই আমার প্রিয়। কৃষ্ণপক্ষও কয়েকবার পড়েছি। আমি যখন উপন্যাসটি পরেছিলাম সত্যি কথা বলতে পড়তে পড়তে অনেক ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম। আমাকে যদি কেউ বলে তোমার পছন্দের ভালোবাসার উপন্যাস কোনটা বা কোনগুলো, তার জবাবে যে ছোট্ট তালিকাটা আমার মুখ থেকে বেরিয়ে আসবে তারমধ্যে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ অবশ্যই থাকবে।জাগো নিউজ : কৃষ্ণপক্ষ উপন্যাসটি আপনার কেমন লেগেছে?মাহি : অসাধারণ। একটি হৃদয় ছোঁয়া গল্প। জীবনের খুব চেনা ও পরিচিত গল্পকে হুমায়ুন স্যার বরাবরই ভিন্ন আঙ্গিকে আন্তরিকতার সাথে সাহিত্যের পাতায় তুলে আনতে পারতেন। কৃষ্ণপক্ষও তেমনি এক গল্প দিয়ে সাজানো। আমার জানা নেই এত সহজ এবং সাবলীল ভাষায় কিভাবে একজন মানুষ এরকম একটা উপন্যাস লিখতে পারেন। কিন্তু যে কাজটা অন্যদের কাছে অসম্ভব, সেই কাজটাই অনেক বেশি সহজ করে লিখতে পারতেন হুমায়ুন স্যার। এজন্যই তিনি এত জনপ্রিয় আর গ্রহণযোগ্য। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ খুব জটিল একটি শব্দ। কিন্ত উপন্যাস হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ একে অতি সাধারণ করে উপস্থাপন করে গিয়েছেন। চমৎকার এক ভালোবাসার গল্প আছে এখানে। যা যে কোনো হৃদয়েই খুব সহজে দাগ কেটে যায়। স্যারের এই উপন্যাসটি খুবই জনপ্রিয়। এটি চলচ্চিত্রের রুপালি পর্দায় আসলে দর্শকরাও লুফে নিবেন বলেই বিশ্বাস আমার। আর এই ছবির সাথে নিজেকে যুক্ত রাখতে পারলে আমি প্রাউড ফিল করবো। কেননা, হুমায়ূন স্যারের গল্পে কাজ করাটা আমার স্বপ্নই ছিলো। জাগো নিউজ : কৃষ্ণপক্ষে আপনার চরিত্রটি কেমন?মাহি : এখানে আমার চরিত্রের নাম অরু। যখন এই উপন্যাসটি পড়েছিলাম তখনই নিজেকে অরুর সাতে মিলিয়ে ভাবতে ভালো লাগত। বলতে পারেন এটি আমার স্বপ্নের একটি চরিত্র। ছবিতে আমার বিপরীতে রিয়াজ ভাইয়ের চরিত্রের নাম মুহিব। এই দুজনের ভালোবাসা নিয়েই উপন্যাসের গল্প। তবে মুহিব আর অরুর ভালোবাসার পাশাপাশি আরো বেশ কিছু চরিত্র রয়েছে এখানে; যারা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অরুর বোন মীরুর কথা এসেছে, মুহিবের বোন জেবার কথা এসেছে, মুহিবের ভাগ্নী প্রিয়দর্শিনীর কথা এসেছে, গাড়ি এক্সিডেন্টের সময় যে বাচ্চা মেয়েটা মুহিবের কোলে ছিল তার কথা এসেছে, মুহিবের দুলাভাইয়ের কথা এসেছে, মুহিবের বন্ধুদের কথা এসেছে, আবার অরুর সাথে যে ছেলেটার বিয়ের কথা চলছিল তার কথাও এসেছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে মুহিব আর অরুর ভালোবাসার কাহিনীতে তাদের উল্লেখ অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য কখনো একটা গন্ডি বা গল্পে নিমজ্জিত থাকে না। তিনি গল্পের ভিতর গল্প বলতে পারতেন। সেইসব গল্পরা মূল গল্পটাকে আরো অনেক বেশি সুদৃঢ় করে দেয়। জাগো নিউজ : রিয়াজের সাথে প্রথম কাজ। কেমন অনুভব করছেন?মাহি : আমি খুব এক্সাইটেড। সত্যিই তাই, এ বিষয়টি ভাবতে গিয়ে গলা শুকিয়ে আসছে(হাহাহা)। আসলে আমি যখন ছোট ছিলাম তখন রিয়াজ ভাইয়ের ছবি নিয়মিতই দেখতাম। তার অভিনীত ছবিগুলো দেখতে এতো ভালো লাগতো যে সেটা বলে বুঝতে পারবো না। আপাদমস্তক একজন অভিনেতা তিনি। বিশেষ করে রোমান্টিক হিরো হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা সব শ্রেণির দর্শকদের কাছে। সালমান শাহের পর এই কৃতিত্ব একমাত্র উনারই। আমি তার অভিনয়ের একজন ভক্ত। তার সাথে প্রথমবারের মত একত্রে কাজ করাটা তো বটেই, তার সাথে জুটি হওয়াটাও আমার জন্য দারুণ কিছু। তাছাড়া হুমায়ূন আহমেদের গল্পগুলোর ফ্লেভার একটি ভিন্ন। সেগুলো যখন পর্দায় আসে তখন অভিনয়টাও হয় খানিকটা ব্যতিক্রম। রিয়াজ ভাই হুমায়ূন স্যারের অনেক কাজ করেছেন। উনার মত অভিজ্ঞ অভিনেতা সহশিল্পী আছেন ভেবে আমিও সাহস পাচ্ছি। জাগো নিউজ : এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো ছবি দেখেছেন?মাহি : (মাহির মুখে ফের হাসির আভাস) হ্যাঁ, ‘রাজাবাবু’ এবং ‘আশিকী’ দেখেছি। ভালোই লেগেছে। এর বেশি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।জাগো নিউজ : আপনার বর্তমান ব্যস্ততা কি নিয়ে?মাহি : ব্যস্ততা বলতে আমি ইদানীং ঘুরে বেড়াচ্ছি একটু বেশি। তবে হাতে ‘ঢাকা এট্যাক’ নামে একটি ছবি আছে। দীপঙ্কর দীপনের পরিচালনায় এই ছবিতে আমার বিপরীতে থাকছেন আরেফিন শুভ। পাশাপাশি ‘কৃষ্ণপক্ষ’ নিয়ে কথা হচ্ছে। আজকালের মধ্যেই সব কনফার্ম হলে ১ অক্টোবর থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কারণ ছবিটি হুমায়ূন স্যারের জন্মদিন ১৩ নভেম্বরে মুক্তি দেয়া হবে। তাই এই অল্প সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে হবে। জাগো নিউজ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কৃষ্ণপক্ষের মতোই সব সাফল্য ধরা দিক.....মাহি : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। জাগো নিউজের পাঠকদের জানাই ঈদের বাসি শুভেচ্ছা (হা হা হা)এলএ/পিআর

Advertisement