দেশজুড়ে

‘ওসির দৈনিক আয় ৩০ লাখ টাকা’

সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেয়ার পর এবার তাহিরপুর থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধরের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে ওসি নন্দন কান্তি ধরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ দেন তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বন্দন এলাকার বাসিন্দা সেলিম ইকবাল।

দুদকে দেয়া অভিযোগে বলা হয়, ওসি নন্দন কান্তি ধর ২০১৭ সালে তাহিরপুর উপজেলায় যোগদানের পর থেকে চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। একই সঙ্গে যাদুকাটা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন ওসি নন্দন কান্তি।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ওসি নন্দন কান্তি ধর ২০০ ড্রেজারের মালিক। প্রতিদিন ড্রেজারপ্রতি ১৫ হাজার টাকা করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আয় করছেন। গত তিন বছর তাহিরপুর থানার ওসি থাকা অবস্থায় এসব টাকা অবৈধপথে অর্জন করেছেন তিনি।’

Advertisement

সেলিম ইকবাল দুদকে দেয়া অভিযোগ আরও উল্লেখ করেন, ওসি নন্দন কান্তি ধর তাহিরপুরে নদী খনন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। জায়গা ভরাট করে দেয়ার নামে তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা মতুর্জা আলীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিলেও জায়গা ভরাট করে দেননি তিনি।

সেলিম ইকবাল অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ওসি নন্দন কান্তি ধরের দুর্নীতির পরিমাণ এতই যে, অবৈধ টাকা দিয়ে ভারত, সিলেটে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। দুর্নীতির অধিকাংশ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। ওসি নন্দন কান্তি ধরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালে তাহিরপুর উপজেলা থেকে বদলি হওয়ার পর বর্তমানে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে কর্মরত নন্দন কান্তি ধর।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাহিরপুর থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর বলেন, আমার কোনো ড্রেজার মেশিন ছিল না, এখনো নেই। আমি আলী মর্তুজার কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। আমার বিরুদ্ধে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। দুদক অভিযোগ তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

Advertisement

এর আগে ১০ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও লুটপাটের মাধ্যমে নামে-বেনামে এসব সম্পদ বানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে গত বুধবার (২০ নভেম্বর) এমপি মেয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান সোহেল।

মোসাইদ রাহাত/এএম/জেআইএম