রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কমিটি বায়ুদূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং আরও কী কী উপায়ে বায়ুদূষণ রোধ করা যায় সে ব্যাপারেও সুপারিশেরর আদেশ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
জনস্বার্থে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ, উত্তরের পক্ষে তৌফিক ইনাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এলাকায় অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে রাজধানীর রাস্তা ও ফুটপাতে ধুলোবালি, ময়লা ও বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন বিশেষজ্ঞ, দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিনিধি, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) প্রতিনিধি ছাড়াও প্রয়োজনে আরও একজন বিশেষজ্ঞ রাখতে বলা হয়েছে।
এর আগে রাজধানীতে বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আবেদন করা হয়। ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে গত ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
ওই দিন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত।
মনজিল মোরসেদ আরও জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকা শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তা ও নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে, সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজের পদক্ষেপ নিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।
Advertisement
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ পালন করে এর দুই সপ্তাহের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিফতরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে এবং যেসব এলাকায় ধুলোবালি বেশি, সেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দুবার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দেয়া হয়। এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে দুই সিটির নির্বাহীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
এফএইচ/এমএসএইচ/এমএস