কক্সবাজারের রামুর সেই উত্তম বড়ুয়ার খোঁজ মেলেনি তিন বছরেও। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে তার ফেসবুক আইডিতে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে দুষ্কৃতকারীরা সহিংস ঘটনায় রামুর ডজনাধিক প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার পুড়িয়ে দেয়। পরে সরকারিভাবে গঠিত পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে ২০৫ জনের মধ্যে ১ নম্বর অভিযুক্ত হন উত্তম বড়ুয়া। কিন্তু হামলার তিন বছর পার হতে চললেও সেই উত্তম বড়ুয়া এখন কোথায় আছেন, তা সবার অন্তরালে রয়েছে।ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাকে হন্য হয়ে খোঁজ করেছিল! ঘটনার পর শিশুপুত্রসহ নিখোঁজ থাকলেও কয়েক মাস পর ফিরে এসে রামুতে বসবাস করছেন উত্তম বড়ুয়ার স্ত্রী রিতা বড়ুয়া। তিনি জানান, উত্তম বড়ুয়ার হদিস তার পরিবারের কেউ পাচ্ছে না। উত্তমের কারণে এখন তাদের জীবনটাই এলোমেলো হয়ে গেছে।কোনো খোঁজ খবর আছে কী-না জানতে চাইলে তার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে নিশ্চিত করেন তার স্ত্রী রিতা বড়ুয়া। উত্তম বড়ুয়া রামু সদরের চেরাংঘাটা গ্রামের সুদত্ত বড়ুয়ার ছেলে। তিনি রামু সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ছিলেন। তার স্ত্রী রিতা বড়ুয়া ছেলে আদিত্য বড়ুয়াকে (৫) নিয়ে স্বামীর বাড়িতে রয়েছেন।এদিকে রামু কেন্দ্রিয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু জানান, উত্তম হয়তো অপরাধ করেছে। প্রশাসন চাইলে তাকে যেকোনে মুহূর্তে আটক করতে পারে। কিন্তু তার কারণে তার নিরীহ স্ত্রী ও অবুঝ শিশুটি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। চরম আর্থিক কষ্টে আছে তারা।উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোরআন অবমাননার একটি ছবি পোাস্টিং-এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামুতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ সহিংসতা। এতে রামুর ১১টি বৌদ্ধমন্দির ও বেশ কিছু বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। এর পরের দিন একই ঘটনা সংঘটিত হয় কক্সবাজারের সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়।এসব এলাকায় ৮টি বৌদ্ধমন্দির ও বেশ কিছু বসতি পুড়িয়ে দেয়া হয়। এসব ঘটনায় কক্সবাজারের চারটি উপজেলায় ১৯টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর মধ্যে রামু থানায় ৮টি, উখিয়া থানায় ৭টি, কক্সবাজার সদর থানায় ২টি ও টেকনাফ থানায় ২টি। মামলায় আসামি করা হয় ১৫ হাজার লোককে। এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ৩৭৫ জন। চলতি বছর ১৯টি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করে পুলিশ।সায়ীদ আলমগীর/বিএ
Advertisement