দেশজুড়ে

দাফনের আগে কেঁদে উঠলো শিশুটি

`মৃত` নবজাতককে গোসল করিয়ে মাখানো হয় আতর। সাদা কাফন পরিয়ে প্রস্তুতি চলছিল দাফনের জন্য। এ সময় কেঁদে ওঠে শিশুটি। তবে এর কয়েক ঘণ্টা আগে হাসপাতালে ওই নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। সোমবার নগরীর লাকসাম রোডস্থ কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। আর এ ঘটনায় কুমিল্লা নগর ও চৌদ্দগ্রামজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়। নবজাতকটি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি এলাকার মাহবুবুর রহমানের ছেলে। রাত পৌনে ৮টায় পর্যন্ত শিশুটির মরদেহ প্যাকেট ভর্তি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের শয্যাপাশে ছিল।জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর মো. মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রুবিনা আক্তারের (২৫) প্রসব ব্যথা ওঠে। এ সময় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয়। এরপর সোমবার বেলা ১২টার দিকে তিনি সাধারণভাবে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।নবজাতকের পিতা মো. মাহবুবুর রহমান ও রুবিনার ভাই ওমর ফারুক জানান, প্রসূতি রুবিনা আক্তার কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে ভর্তির পর গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মলিনা রাণী কুণ্ডুর অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বেলা ১২টার দিকে রুবিনার নরমাল ডেলিভারি হয়। এ সময় তিনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।এ সময় ডা. মলিনা রাণী কুণ্ডু হাসপাতালে ছিলেন না। কিন্তু ডেলিভারির পর কর্মরত ডা. ফারজানা আক্তার ডেইজিসহ সংশ্লিষ্ট নার্স শিশুটির দেহ কালো বর্ণ ধারণ করেছে ও শিশুটি মারা গেছে বলে জানায়। এরপর হাসপাতালের ময়লা ফেলার বালতিতে শিশুটির মরদেহ ফেলে দেয়ার কথা বলে তারা। এতে শিশুটির বাবা অনিহা প্রকাশ করেন। এ সময় তারা (নার্স) তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিস্কুটের কার্টনে ভর্তি করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। পরে স্বজনদের মাধ্যমে জানাজার জন্য হাসপাতাল থেকে শিশুটির মরদেহ আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠায়।শিশুর নানা ইব্রাহিমসহ এলাকার লোকজন জানান, শিশুকে বাড়িতে নেয়ার পর বিকাল ৪টার দিকে দাফনের প্রস্তুতি নেয়ার হলে শিশুটি কান্নাকাটিসহ নড়াচড়া ও চোখ এদিক-ওদিক করতে থাকে। এ খবর পেয়ে জানাজায় আগত লোকজন ছাড়াও এলাকাবাসী জড়ো হয়। পরে ওই শিশুকে তাৎক্ষণিকভাবে ওই হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিশুটি মারা যায়।এ বিষয়ে ডা. মলিনা রাণী কুণ্ডু রাতে সাংবাদিকদের জানান, শিশুর নরমাল ডেলিভারির সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না, তবে ডা. ফারজানা আক্তার ডেইজি আমাকে জানিয়েছিল শিশুটি মারা গেছে। তবে শিশুর এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা অমানবিক।কামাল উদ্দিন/এআরএ/বিএ

Advertisement