জাতীয়

মন পড়ে আছে গ্রামের বাড়িতে

ঝক্কি ঝামেলা পেরিয়ে ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছি। প্রিয়জনদের সঙ্গে মধুর সময় পাড় করেছি। বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লুর করে পাড় করেছি সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত। কিন্তু জীবিকার টানে আবারো ফিরতে হলো ঢাকায়। কর্মস্থলে ফিরলেও বিষন্ন মনটা পড়ে আছে গ্রামের বাড়ি।ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে একদিন আগে। নির্ধারিত ছুটির পরও আরো একদিন বেশি থেকে ঢাকায় ফিরতে বাধ্য হয়েছেন বগুড়ার মহসিন আলী। গাবতলীতে টিআর বাস থেকে নামার পর জাগো নিউজের কাছে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তির কথা জানান তিনি। শুধু মহসিন আলীই নন এ রকম হাজারো মানুষ গেছেন রাজধানী ছেড়ে। ঈদ শেষে আবারো ফিরছেন ঢাকায়।নাড়ির টানে ছুটে যাওয়া এসব ঘরমুখো মানুষের বেশির ভাগই রোববার সকাল থেকেই ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে সোমবার রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ছিলো পেশাজীবী মানুষের উপচে পড়া ভীড়। ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছিল বৃষ্টি আর যানজট। কিন্তু নাড়ির টানে ঘরমুখি মানুষকে বিমুখ করা যায়নি। সোমবার সকালে দেখা গেছে, তীব্র গরম আর রোদ উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কর্মস্থলের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে প্রতিটি গাড়িতে গাদাগাদি করে ফিরছে মানুষ। এই ফেরার পথে ইচ্ছামতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস মালিকরা। মহাসড়কে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন আর কোলাহল ফিরেছে গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে। চিরচেনা রুপে ফিরতে শুরু করেছে ঢাকা। এখন যারা ফিরছেন তাদের অধিকাংশরাই কর্মজীবী মানুষ। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতেই টিকিট টানাপোড়নের মধ্যে ঢাকামুখী হয়েছে মানুষ। গাবতলী বাস টার্মিনালে নামা অনেক যাত্রীই অভিযোগ করেছেন, ঈদের ছুটি ছিল মাত্র তিন দিন। অনেকেই টিকিট না পেয়ে একদিন ছুটি বাড়িয়ে নিয়ে সোমবার ফিরেছেন। অনেকেই ফেরার পথে টিকিট পাননি। বাসে ভেতরে কিংবা ছাদে বসে ফিরেছেন রাজধানীতে। কল্যাণপুরে কথা হয় যশোর থেকে ফিরে আসা যাত্রী মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে জন্মস্থানের মাটি স্পর্শ করার লড়াইয়ের পর আজই কর্মস্থল যোগদান করতে ফিরলাম। সবাইকে খুব মিস করছি। বরিশাল থেকে ফিরে আসা কাজেম আল সরকার জানান, ভোগান্তিতে মানুষ ঈদের ছুটিতে গেলেও প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ও খুশির সময় পাড় করোনোর স্মৃতিই আলাদা। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে খুব খারাপ লেগেছে। মনে হয়েছে আরো দিন কয়েক থেকে যাই। খুলনা থেকে ফেরা আবু তালেব জানান, প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে রাজধানীতে ফিরছে কর্মজীবী মানুষ।রাস্তায় যতই থাকুক যানজট, যতই অনিশ্চয়তায় কাটুক দিন, তবুও জীবিকার প্রয়োজনে ফিরতে হচ্ছে ঢাকায়। শ্রমজীবী মানুষের কর্মস্থলে ফেরা আরো দিন কয়েক অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডের টিকিট বিক্রেতা বাবু জানান, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিয়ে রাস্তায় মহা বিপাকে পড়তে হলেও ফেরার পথে কোনো যানজট হয়নি। এখন যারা ফিরছেন তাদের অধিকাংশরাই কর্মজীবী। বিভিন্ন জেলা থেকে জানানো হয়েছে আরো ২ দিনের ফিরতি টিকিট ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।জেইউ/আরএস/এমএস

Advertisement