আইন-আদালত

নতুন সড়ক আইন : জানা ও মানা না মানার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব

সড়ক দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। তবে সভ্যতা ও আইন মানা না মানার মাত্রায় দেশ ভেদে দুর্ঘটনার হার কম বা বেশি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ৫৫ ব্যক্তির প্রাণহানি হচ্ছে। আর বাংলাদেশ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণা বলছে, দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১২ হাজার মানুষ নিহত ও ৩৫ হাজার আহত হন।

Advertisement

এই পটভূমিতে নতুন ‘সড়ক পরিবহন আইন’সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তবে বাংলাদেশে প্রাণহানি ঘটার যত উপলক্ষ আছে, তার মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অন্যতম। বিগত ৩ দশকে রাস্তায় মৃত্যুর মিছিল বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যায় তার পথ বের করতে আইনবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতাদের গলদঘর্ম হতে দেখা যায়। এদিকে একটি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় স্বজনহারা ও সচেতন নাগরিকের আন্দোলন শুরু হয়।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই, রাজধানীর বিমান বন্দর সড়কে একটি স্কুলের দুইজন শিক্ষার্থী বাস চাপায় নিহতের ঘটনায় সারাদেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছে কীভাবে রাস্তায় চলাচলের ট্রাফিক আইন মানতে হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল সেবার। সারাদেশবাসী এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে অনেক যৌক্তিক শর্ত আরোপ করে এবং অনেকটা বাধ্য হয়ে সরকার শিক্ষার্থীদের সেই শর্ত মানতে বাধ্য হয়।

Advertisement

ফলশ্রুতিতে ১৯৮৩ সালের মোটর ভেহিকলস অর্ডিনেন্স (Motor Vehicles Ordinance, 1983 (Ordinance No. LV of 1983) রদ রহিতক্রমে এই সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণীত হয় এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে অনেক আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে ১ নভেম্বর ২০১৯ ওই আইনটি কার্যকরী হয়।

আইনের ভাষ্য, বিধিমালা দ্বারা আইন অনেকটাই পরিচালিত হয়। আইনের অস্পষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্য বিধিমালা জরুরি। তাই বিধিমালা প্রণয়ন ছাড়া এই আইন পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব নয়। আইনের ছাত্র হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সামাজিক দিক বিবেচনায় নতুন সড়ক আইনের প্রাথমিক জ্ঞান জনসচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা এই লেখার মধ্যে তুলে ধরা হবে।

নতুন সড়ক আইনে ১২৬টি ধারা, ৫৮টি সংজ্ঞা এবং ১৪টি নতুন বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিধানগুলো হচ্ছে, ১) সড়কে গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হত্যা করলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২) সড়কে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালালে বা প্রতিযোগিতা করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। আদালত অর্থদণ্ডের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে দেয়ার নির্দেশ দিতে পারবে। ৩) মোটরযান দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতর আহত বা প্রাণহানি হলে চালকের শাস্তি দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল ও সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা।

৪) ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান বা গণপরিবহন চালানোর দায়ে ছয় মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে।

Advertisement

৫) নিবন্ধন ছাড়া মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।

৬) ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার এবং প্রদর্শন করলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

৭) ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে।

৮) ট্রাফিক সংকেত মেনে না চললে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

৯) সঠিক স্থানে মোটরযান পার্কিং না করলে বা নির্ধারিত স্থানে যাত্রী বা পণ্য ওঠানামা না করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

১০) গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ১১) একজন চালক প্রতিবার আইন অমান্য করলে তার পয়েন্ট বিয়োগ হবে এবং এক পর্যায়ে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।

১২) গণপরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দণ্ডিত করা হবে।

১৩) আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সে পেতে হলে চালককে অষ্টম শ্রেণি পাস এবং চালকের সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে। আগে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

১৪) গাড়ি চালানোর জন্য বয়স অন্তত ১৮ বছর হতে হবে। এই বিধান আগেও ছিল। এছাড়া সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/গণপরিবহনের রুট পারমিট গ্রহণ না করা-সংক্রান্ত ধারা ২৯-এর বিধান এর দণ্ড লঙ্ঘন করেন, এজন্য তিনি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মজার ব্যাপার হলো নতুন সড়ক আইনে ৩টি ধারার অপরাধ ব্যতীত সকল অপরাধ জামিনযোগ্য। শাস্তির পরিমাণ ও পূর্বের ন্যায় যদিও জরিমানার পরিমাণ বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। জনগণ একটু সচেতন হলে জরিমানা দিতে হবে না। যেমন হেলমেট পরে গাড়ি চালালে বা ট্রাফিক সংকেত মানলে বা গাড়ির লাইসেন্স করা থাকলে তো কোন জরিমানা দিতে হবে না।

সুতরাং জরিমানা কম না বেশি সেটা চিন্তা না করে আইন মান্যকারী সচেতন নাগরিক হতে হবে। নতুন আইনের ১১৪ ধারায় বলা হয়েছে এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত, বিচার আপিল ইত্যাদির ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. Vof 1898) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

নতুন সড়ক আইনের ১১৭ ধারায় অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তবে Code of Criminal Procedure, 1898 ( Act No. Vof 1898) এ ভিন্নতর কিছু বলা না থাকলে এই আইনের অধীন সংঘটিত সকল অপরাধই আমলযোগ্য (Cognizable) এবং এই আইনের ধারা ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ এর অধীন সংঘটিত অপরাধ ব্যতীত সকল অপরাধই জামিন যোগ্য (Bailable)। এবং এই আইনের ধারা ৬৬, ৭২,৭৯, ৮৭, ৮৯ এবং ৯২ এর অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য (Compoundable) হইবে।

তবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিচের পদমর্যাদার কেউ আপোষ করতে পারবে না। আইনের ৮৪ ধারায় গাড়ির আকৃতি পরিবর্তনে তিন বছর কারাদণ্ড বা এক থেকে তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ৮৪ ধারা ছাড়াও বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে আহতরা (৯৮ ধারা), সড়কে মৃত্যুর (১০৫ ধারা) মামলা জামিন অযোগ্য করা হয়েছে এ আইনে। জামিন অযোগ্য হলেও উক্ত ধারাসমূহে শাস্তির পরিমাণ কমই বলা যায়। সে জন্য চালকদের ভয় পাওয়ার কিছু নাই।

সড়কে গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হত্যা করলে ৩০২ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইনে দুর্ঘটনায় কেউ মৃত্যুবরণ করলে চালকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হবে এই বিষয়টি পরিবহন ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। কেননা তারা ভাবছেন গাড়ি এক্সিডেন্ট একটা দৈব ঘটনা। এখানে মৃত্যুদণ্ডের বিধান অনেকটা কঠিন শাস্তির বিধান। সেটা থাকলে কেউ গাড়ি চালাবে না এবং যারা গাড়ি চালক তারা নিরুৎসাহিত হবে।

আইনের ছাত্র হিসেবে বলতে চাই, সড়ক পরিবহন আইনটি কোনোভাবেই গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে নয় বরং যারা আইন মানেন না তাদের জন্য সতর্কতা ও সচেতনতা সৃষ্টির আইন। সড়কে গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হত্যা সংঘটিত করলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী হত্যা মামলা হবে তবে সেটি তদন্ত সাপেক্ষে।

যিনি অভিযোগ করবেন তাকেই প্রমাণ করতে হবে হত্যার ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত। এই বিষয়টি প্রমাণ করার দায়ভার যার ওপরে বর্তাবে তাকে হত্যার বিষয়টি প্রমাণ করতে হিমশিম খেতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হত্যার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটেছে তা প্রমাণিত হবে না। তবে হত্যা করলে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বর্তমান আইনে বাতিল করা হয়েছে।

বর্তমানে রহিত/বাতিল হওয়া ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশ-এ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত/নিহত/ক্ষতিগ্রস্ত হলে ধারা- ১২৮ এর বিধান মতে বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা জজের অধীনে ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে (Claims Tribunal এ) আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারতো।

এই ‘আর্থিক ক্ষতিপূরণ’-এর পরিমাণ ছিল অনির্দিষ্ট (Unliquidated Damages), অর্থাৎ, ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কত হবে তা অবহেলা প্রসূত প্রতিটি পৃথক দুর্ঘটনায় কৃত ক্ষয়-ক্ষতির ভিত্তিতে নির্ধারণ করার এখতিয়ার ছিল সংশ্লিষ্ট আদালতের।

সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার মরহুম তারেক মাসুদ ও তার পরিবার ২০১২ সালে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ এর ১২৮ ধারানুযায়ী গঠিত এই ‘Claims Tribunal’ এ ‘আর্থিক ক্ষতিপূরণ’ চেয়ে মামলা করে হাইকোর্ট-এর হস্তক্ষেপে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন! আশ্চর্যের বিষয় হলো- নতুন প্রবর্তিত সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ক্লেইমস ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে মামলা করার এই বিধান বাতিল করা হয়েছে!

উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- এই নতুন আইনের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবির মামলা গ্রহণে আদালতের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দাবির পুরো প্রক্রিয়াকে ‘বিচার-বহির্ভূত’ বা Extra-judicial ও আমলাতান্ত্রিক করে ফেলা হয়েছে। সংক্ষুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির আদালতে আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ রুদ্ধ করে ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে, যা ক্ষতিপূরণ দাবির প্রক্রিয়াকে আমলাতান্ত্রিক, জটিল ও সময়সাপেক্ষ করে ফেলবে।

মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর তফসিল সংশোধন করে সড়ক পরিবহন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা পুনঃস্থাপন করার পর শুধু রাজধানীতে কয়েকটি স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার খবর পাওয়া গেছে। তবে তা অপ্রতুল। মোবাইল কোর্ট-এর বিচারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ত্রুটিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা, নানা আইনে মোবাইল কোর্টের বিচার ঠিক আইন ও বিধি সম্মত না হওয়ায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।

এ দিকে এই আইনকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারছে না পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। তারা বিধিমালা প্রণয়ন ছাড়া আইন কার্যকর করা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। যৌক্তিক দাবি

অনুযায়ী যথাশিগগিরই আইনকে পরিপূর্ণতা দিতে বিধি প্রণয়ন জরুরি। তা নাহলে এই আইনে উল্লেখিত কিছু ধারা, যেগুলো বিধি দ্বারা পরিচালিত হবে লেখা আছে, তা বিধি না হওয়া অবধি কার্যকরী হবে না।

ট্রাফিক সংকেত মানতে ও হেলমেট পরে গাড়ি চালাতে হবে- এই বিষয়টি শিখার জন্য যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লাগে না। তেমনি ট্রাফিক সংকেত না মানলে বা হেলমেট না পরলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে এই বিষয়টি ভয় দেখিয়েও মানানো সম্ভব নয়।

ভয় দেখিয়ে নয়, দরকার জাতিকে সভ্য হিসেবে গড়ে তোলা। স্কুলের পাঠ্য বইয়ে ট্রাফিক সংকেত, হেলমেট পরার লাভ কি, উল্টা পথে গাড়ি চালালে কি হয়, অবৈধ পার্কিং-এর অপকারিতা, গাড়িতে সিট বেল্ট বাঁধলে কি লাভ ক্ষতি, মদ্যপ ও বেপরোয়া গাড়ি না চালানো, গাড়ি চলাকালে মোবাইল ফোনে কথা না বললে কি উপকারিতা ইত্যাদি সংযুক্ত করা।

যাতে করে বাল্যকাল থেকেই ট্রাফিক আইন মানতে শেখে। শুধু এক সপ্তাহ সময় দিয়ে এত সুন্দর একটা সড়ক আইন সকলকে মানানো কঠিন হবে। তবে আমি আশাবাদী একজন নাগরিক। সরকার এই আইন বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং করছে।

বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, এনজিও সামগ্রিকভাবে দেশের সুশীল সমাজ ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বাধীন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) যদি এই আইন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করে, তবে দেশে ট্রাফিক আইন জানা ও মানার হার বেড়ে যাবে এবং সে হারে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে যাবে। তবে ট্রাফিক আইন মানাতে পরিবার থেকে রাষ্ট্র, তথা সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আইএইচএস/জেআইএম