সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রথমে সহনীয় পর্যায়ে কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ আইন বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেন হয়রানি কিংবা বাড়াবাড়ি না করে, সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নতুন আইনে জরিমানা আদায় করা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, সরকার চায় সবাই আইন মেনে চলুক। নতুন সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই প্রধান উদ্দেশ্য।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল থেকে মাঠ পর্যায়ে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ কার্যকর হয়েছে। এ কার্যকর গত ১ নভেম্বরই হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে এটি বাস্তবায়নে দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছি। আইনটি কার্যকরে অনেকেই আরও বেশি সময় চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি তাতে রাজি হয়নি। প্রধানমন্ত্রীও আইনটির বাস্তবায়ন চান। তাই আইনটি কার্যকর করতে শুরু করেছি।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে আইনটি সহনীয় পর্যায়ে কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও এ আইনে শাস্তি দেয়া যাবে-এ বিষয়ে গতকাল একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আইনটির বিধিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।’
বিধিমালা প্রণয়ন বিলম্বের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও অসুস্থ ছিলাম। সবকিছু মিলে এটি প্রণয়নে দেরি হয়েছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই এটি প্রণয়ন হয়ে যাবে।’
কাদের বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইনটি স্বাভাবিক কারণেই আগের তুলনায় কঠোর করা হয়েছে। কঠোর করার উদ্দেশ্য শাস্তি দেয়া নয়, সকলের কল্যাণ ও সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এ আইনে ট্রাফিকের নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।’
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ আইনটির বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার আহ্বান জানান তিনি। যাতে আইনটি কার্যকরে কোনো সমস্যা না হয়। তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী যাতে এটি কার্যকরে অযথা কোনো হয়রানি বা বাড়াবাড়ি না করে সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি, যাতে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি না হয়।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘সড়ক নিরাপদ ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। এটাতে সমাজের বিভিন্ন অংশীজনকে এগিয়ে আসতে হবে।
আইন যখন কার্যকর শুরু হয়েছে তখন পরিবহন মালিকরা বড় ধরনের আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কাছে এ খবর আছে। এ বিষয়ে আমাদের সচিবও তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাই বলে তো আমরা আইন প্রয়োগ না করে এ থেকে সরে যাব, এটা হয় না। যত চাপ থাকুক সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন হবে।’
হালকা লাইসেন্স দিয়ে ভারী গাড়ি চালানো হচ্ছে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন তো বিআরটিএতে (লাইসেন্স নেয়ার জন্য) হিড়িক পড়ে গেছে। বিআরটিএ কর্মচারী-কর্মকর্তারা অতিরিক্ত সময় কাজ করছে। লোকজনও বাড়ানো হচ্ছে, তারপরও এটা একটা চ্যালেঞ্জ। সবাই সহযোগিতা করলে আমরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।’
ঢাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় এ আইন বাস্তবায়ন কতুটুকু যুক্তযুক্ত-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ঢাকাকে নিয়ে ভাবছেন কেন? সারা দেশকে নিয়ে ভাবুন। ঢাকার পার্কিং নিয়ে সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে। কিন্তু ডেঙ্গু পুরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় সিটি কর্পোরেশনের মনোযোগটা ওই দিকে চলে গিয়েছিল। এ বিষয়ে তারা আবার কাজ শুরু করেছে।’
এমইউএইচ/এনএফ/এসআর/পিআর