বছর চারেক আগেও জলাবদ্ধতার কারণে হেক্টরের পর হেক্টর জমি চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। ঋণ করে জমি আবাদ করলেও অধিকাংশ সময়ে ফসল ঘরে ওঠেনি। তবে এখন পাল্টে গেছে সেই চিত্র। আবাদের আওতায় এসেছে ১৬ হাজার হেক্টরের বেশি পতিত আবাদি জমি। বেড়েছে ধান উৎপাদন। সুফল ভোগ করছেন নওগাঁর ৬ উপজেলার প্রায় দেড় লাখের বেশি কৃষক।
Advertisement
তারা জানান, বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) উদ্যোগে এক খাল খনন প্রকল্পই বদলে দিয়েছে এই চিত্র। ‘নওগাঁ জেলার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প’ নামের এই প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে।
বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় নওগাঁ সদর, মান্দা, রাণীনগর, আত্রাই, পত্নীতলা, ধামইরহাট এই ছয় উপজেলার ওপর দিয়ে প্রায় ৯৩ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। ফুটওভার ব্রিজ ও ক্রস ড্যাম মিলিয়ে আছে ১৩টি।
এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ৭৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রকল্পটি শেষ হয়। যার কারণে বছর প্রতি ধান, রবি শস্যসহ ৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
Advertisement
নওগাঁ সদর উপজেলার মাগনা কোমরকোঠা এলাকার আফজাল শাহ নামের এক কৃষক বলেন, খাল খননের আগে বন্যার পানি জমে থাকতো, ঘরবাড়ি ডুবে যেত। ধান লাগাতে ২ থেকে ৩ মাস দেরি হতো। অপরদিকে ধান কাটার সময় হওয়ার আগেই বন্যা চলে আসতো। অনেক ধান উঠানো যায়নি। তবে এখন সময় মতোই ফসল আবাদ হচ্ছে।
মান্দা উপজেলার গড়িয়াচান এলাকার ইনছের আলী নামে এক কৃষক বলেন, বোরো আবাদ নিশ্চিত করেছে এই কাজটি। জমিগুলো চাষ উপযোগী হয়েছে । প্রতি হেক্টরে যেখানে আগে ধান উৎপাদন হতো ৬০ থেকে ৭০ মণ। সেখানে এখন ১০০ থেকে ১১০ মণ ধান উৎপাদন হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিএমডিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ টি এম মাহফুজুর রহমান বলেন, পূর্বে আমন, আউশ, বোরো এবং রবি শস্য উৎপাদন করতে পারিনি আমরা। এখন পতিত জমিগুলো আবাদের আওতায় এসেছে। যার উপকার ভোগ করছেন প্রায় ৮০ হাজার নারী ও ৮৫ হাজার পুরুষ। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর বছরে প্রায় ২৩০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন হচ্ছে এই এলাকায়। শুধু ধান উৎপাদন নয়, সবজি চাষ, হাঁসপালনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই উদ্যোগ।
এমএমজেড/জেআইএম
Advertisement