ইট পাথরের এই শহরে হয়ে গেল দক্ষিণ এশিয়ার লোকসংগীতের সর্ববৃহৎ আসর ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্ট ২০১৯’। শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে ফোক ফেস্টের শেষ দিনের প্রধান চমক ছিলেন পাকিস্তানের জুনুন।
Advertisement
শনিবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে আসরের শেষ নিজেদের পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন তিনি। স্বাগতম ঢাকা, মঞ্চে উঠে মাইক্রোফোন হাতে নিয়েই দর্শকদের এভাবে স্বাগত জানান ফোক ফেস্টের শেষ দিনের প্রধান আকর্ষণ উপমহাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী জুনুন।
গান শুরু করার আগে আরও জানালেন, প্রথমবার ঢাকায় এসে ভালো লাগছে। চমৎকার মানুষ আপনারা। এখানকার মানুষ সংগীতপ্রিয়। এখানে শোনাতে পারব বলে আরও ভালো লাগছে।
এরপর প্রথমেই গাইলেন ‘তেরি মেরি মওলা সাহে’। এরপর একে একে শোনালেন ‘সাইওনি’, ‘ও লাল মেরি পাতে রাখিও বালা ঝুলে’, ‘চারদিনা দিল মেরা নেহি লাগতা’, ‘তুহি হাই মেরা’ ছাড়াও নিজের সব জনপ্রিয় গান। ততক্ষণে জুনুন উন্মাদনায় ভাসে সমগ্র আর্মি স্টেডিমায়।
Advertisement
জনপ্রিয় সব নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা মঞ্চে ছিলেন জুনুন। দর্শককে ভাসিয়েছেন তার গানের উন্মাদনার মধ্যেই রাত ১২টায় পর্দা নামলো ফোক ফেস্টের পঞ্চম আসরের।
উপমহাদেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে এক উন্মাদনার নাম জুনুন। পাকিস্তানি এই ব্যান্ডটি সুফি ঘরানার গান দিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে।
১৯৯৭ সালে নিজেদের চতুর্থ অ্যালবাম ‘আজাদি’ দিয়ে সারা উপমহাদেশে ঝড় তোলে জুনুন। অ্যালবামের প্রথম গান ‘সাইওনি’ পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশ তিন দেশের শ্রোতাদের কাছেই তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
জুনুনের আগে ফোক ফেস্টের মঞ্চ মাতান বাংলাদেশের জনপ্রিয় লালনসঙ্গীত শিল্পী চন্দনা মজুমদার। 'চাতক ভক্তিতে ভোলাবেন সাই', 'ধন্য ধন্য বলি তারে', 'সিন্নি খাওয়ার লোভ', 'তুমি জানো নারে প্রিয়', 'মুর্শিদ পরশ মনি গো', 'যাও পাখি বলো তারে' শিরোনামে গানগুলো গেয়ে হাজারও দর্শকের মন ভরিয়েছেন তিনি। মালেক কাওয়ালের গান দিয়ে শুরু হয় তৃতীয় দিনের আয়োজন। তারপর গেয়েছে রাশিয়ার ব্যান্ড সাত্তুমা।
Advertisement
প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। গতকাল দ্বিতীয় দিনে মঞ্চ মাতিয়ে গেছেন বাংলাদেশর কামরুজ্জামান রাব্বি, কাজল দেওয়ান, ফকির শাহাবুদ্দিন, মালির হাবিব কইটে ও পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহর।
এর আগে প্রথমদিন মঞ্চ মাতিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত বাউল শিল্পী শাহ আলম সরকার, ভারতের দালের মেহেন্দি ও জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি।
২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের এবার ছিলে পঞ্চম আসর। পাথরের শহরে থেকেও যারা মাটির গান ভালোবাসেন, গত তিনটা দিন ফোক ফেস্টে ভালোই কেটেছে তাদের। আবারও শুরু আগামী ফোক ফেস্টের প্রতিক্ষা।
এমএবি/এমএসএইচ