দেশজুড়ে

প্রধান শিক্ষকের ভুলে একবছর পেছালো রাকিবার শিক্ষাজীবন

প্রধান শিক্ষকের অবহেলায় এসএসসি পাস করে শিক্ষা জীবন এক বছর পিছিয়ে গেছে রাকিবা আক্তারের। সে চলতি বছরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার জেবুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। পরীক্ষার ফলাফলে প্রথমে ইংরেজি বিষয়ে ফেল দেখানো হয় তাকে। পরে নির্ধারিত বোর্ড ফি দিয়ে পুনঃনিরীক্ষণে ওই বিষয়ে উত্তীর্ণ হয় সে।

Advertisement

এদিকে ফলাফল সংশোধেনের পর তার পরীক্ষার নম্বরফর্দ বিদ্যালয়ে আসলেও বিষয়টি গুরুত্ব দেননি প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। উপরন্ত ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য তার বাবা সৈয়দ জাকির হোসেনকে ফোন করেন। ১৫০ টাকা ফি দিয়ে ইংরেজি বিষয়ে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় ফরম ফিলাপের জন্য ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

দরিদ্র বাবা ২ হাজার টাকা দিতে অসামার্থ্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে দেড় হাজার টাকা দিলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। হতাশ হয়ে বাজারে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দফতরি দেলোয়ারের সঙ্গে দেখা হয় তার। এ সময় সে ঘটনা শুনে জাকির হোসেনকে মেয়ের ফরম ফিলাপ না করে সেই টাকায় স্কুলে মিষ্টি নিয়ে যেতে বলেন। দেলোয়ার তাকে বলেন, আপনার মেয়ে তো পাশ করেছে ফরম ফিলাপ করতে হবে না।

এ ঘটনায় জাকির হোসেন আফসোস করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতে আমার মেয়ের শিক্ষাজীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। সহপাঠীদের থেকে এক ব্যাচ পিছিয়ে গেল।

Advertisement

রাকিবা আক্তার জানায়, স্যারের (প্রধান শিক্ষকের) গাফিলতিতে আমার জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল। এখন কোথাও এইচএসসিতে ভর্তি হবার সুযোগ নেই। সারাজীবনের তরে সহপাঠীদের কাছ থেকে পিছিয়ে গেলাম।

‘স্যার এখন ভুল স্বীকার করলেও তিনি তো আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি বছর ফেরত দিতে পারবেন না’ বলে কেঁদে ফেলে সে।

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, পুনঃনিরীক্ষণ যদি স্কুলের মাধ্যমে করলে আমার মোবাইলে ম্যাসেজ আসতো। নিজেরা পুনঃনিরীক্ষণের কাজটি করায় ম্যাসেজ তাদের মোবাইলে যায়। কিন্তু আমাকে তারা (রাকিবার অভিভাবক) কিছুই জানায়নি। বোর্ড থেকে যখন মার্কশিট আসে তখন সবগুলো যাচাই করা হয়নি। ফরমফিলাপের সময় অকৃতকার্যের তালিকা করার পর রাকিবার নাম না আসায় কাগজ যাচাই করায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। তারা (রাকিবার অভিভাবক) চাইলে এখন বিনয়কাঠি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি করা সম্ভব হবে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক আকন্দ জানান, অনেক কাজের মধ্যে ২/১টি ভুল হতে পারে। এ ভুলটি প্রধান শিক্ষকের অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে। রাকিবার অভিভাবকরা চাইলে তাকে এইচএসসিতে ভর্তি করার সুযোগ এখনও আছে। আমরা ভর্তিতে সহযোগিতা করতে পারি।

Advertisement

মো. আতিকুর রহমান/এমএমজেড/এমএস