বিনোদন

সাহিত্য-নির্মাণের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

সাহিত্যাঙ্গনে কিংবদন্তি এক নাম। পাঠক মুগ্ধ করার জাদুকর তিনি। নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণেও সফল, ভিন্ন এক ধারার প্রবর্তক। গান লেখাতেও হয়ে আছেন কালজয়ী গীতিকবি। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। সবার প্রিয় হুমায়ূন স্যার।

Advertisement

আজ প্রয়াত এই কথাসাহিত্যিক ও নন্দিত নির্মাতার ৭১তম জন্মদিন। তার জন্মদিনকে ঘিরে ভক্ত-অনুরাগীরা ভাসছেন স্মৃতির সাগরে। প্রিয় লেখকের নানা উক্তি, ছবি পোস্ট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া বেশকিছু টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে নানারকম অনুষ্ঠান।

জন্মদিন উপলক্ষে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে কিছু উদ্যোগ। লেখকের নিজের হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতে তার সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হবে।

দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ জন্মেছিলেন ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে। তার বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। হুমায়ূন আহমেদ তার কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যর বেশিরভাগ শাখাতেই।

Advertisement

বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের জানান দেন। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। আগুনের পরশমনি ছবির দৃশ্যে আসাদুজ্জামান নূর ও শীলা টেলিভিশন নাটকেও চমক দেখিয়েছেন তিনি। বদলে দেন নির্মাণের বাঁক।

১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।

১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমাটি। এটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এ ছাড়াও এটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এরপর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন।

২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। নিজের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

Advertisement

তবে হুমায়ূন আহমেদ সর্বজন প্রিয় হয়ে আছেন হিমু ও মিসির আলী চরিত্রের স্রষ্টা হিসেবে। এ ছাড়াও তাকে বলা হয় তারকা গড়ার কারিগর। তার হাত ধরে অনেক অভিনয় ও সঙ্গীতশিল্পীরা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।

হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও দোসরদের হাতে শহীদ হন। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তার দুই ভাই মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। প্রত্যেককেই লেখালেখিতে পাওয়া গেছে।

হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন অভিনয়, নৃত্যের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও প্রশংসিত। তার বড় পুত্র নুহাশ হুমায়ূনও সাম্প্রতি নাটক নির্মাণে নাম লিখিয়েছেন।

এমএবি/এলএ/এমআরএম