ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা নিহতদের হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করছেন।
Advertisement
এরপর স্বজনদের খবর দেয়া হচ্ছে মরদেহ নেয়ার জন্য। নিহতদের মরদেহ স্থানীয় বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। হাহাকারে ছেয়ে গেছে বিদ্যালয়টার চারপাশ। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন কারও বাবা, ভাই ও মা।
দুর্ঘটনায় বাবা মুজিবুর রহমান ও মা কুলসুমা বেগমের মৃত্যুর খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটে এসেছেন কাউসার। বাবা-মায়ের মরদেহ দেখে কেঁদে ওঠেন তিনি।
কাউসার বলেন, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও এলাকায় তাদের বাড়ি। বাবা মুজিবুর রহমান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে খাতা-কলম ফেরি করে বিক্রি করতেন। মঙ্গলবার উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে চাঁদপুর ফিরছিলেন। কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হলো না। আমি এতিম হয়ে গেলাম।
Advertisement
উদয়ন ট্রেনের যাত্রী হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মদনমোরদ এলাকার শামীম হোসেন জানান, তিনি ও ভাই আল-আমিন এবং মামা মনু মিয়াকে নিয়ে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন থেকে উদয়নে উঠেছিলেন। চট্টগ্রামে তারা তিনজনই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ট্রেনে আসন না পাওয়ায় বগির দুই দরজায় তারা দাঁড়িয়েছিলেন। হুট করে বিকট শব্দ হলে তিনি মামাকে নিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়ে যান। এরপর খুঁজতে থাকেন ভাই আল-আমিনকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ট্রেনের চাকার নিচ থেকে তার মরদেহ বের করা হয়। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাকে এখন স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
পিবিআই নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার পর এক এক করে তাদের স্বজনদের খবর দিচ্ছেন মরদেহ নেয়ার জন্য। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমএস
Advertisement