দেশজুড়ে

ট্রেন দুর্ঘটনায় যে দুই কারণকে দায়ী করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার জন্য সাধারণত দুটি কারণকে দায়ী করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা মনে করছেন, দুর্ঘটনার পেছনে বড় যে দুটি কারণ থাকতে পারে তার একটি হচ্ছে হয় তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসকে সিগন্যাল দেয়া হয়নি বা পরে দেয়া হয়েছে। অন্যটি হচ্ছে তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক হয়তো ঘুমিয়ে ছিলেন তাই সিগন্যাল দেখেননি। এই দুটির কোনো একটির কারণেই মন্দবাগ স্টেশনের কাছে উদয়নকে ধাক্কা দেয় তূর্ণা নিশীথা।

Advertisement

তবে মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, আউটার ও হোম সিগন্যালে লাল বাতি (সতর্ক সংকেত) দেয়া ছিল। কিন্তু তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি করছেন তিনি।

স্টেশনের আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সিগন্যাল (সংকেত) অমান্য করেন অথবা তাকে সিগন্যাল দেয়া হয়নি। মন্দবাগ রেলস্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য এই সিগন্যাল দেয়ার কথা। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে যেতে শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পেরেছিল। অন্য বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে। এতে তূর্ণা নিশীথার একাধিক বগি ওই ট্রেনের কয়েকটি বগির ওপর উঠে যায়। এতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই আটজনের মৃত্যু হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে বাকিরা মারা যান। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করে লাইনে ঢুকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ধাক্কা দিয়েছে। তবে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিতু মরিয়মকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত পৌনে ৩টার দিকে মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুই ট্রেনের শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও বেশিরভাগেরই পরিচয় পাওয়া যায়নি।

রিপন দে/এমবিআর/এমএস