রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
Advertisement
আজ সোমবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আবারও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-২ এর উপ-পরিদর্শক প্রণয় কুমার প্রামাণিক। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মোহাম্মদপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর অস্ত্র ও মাদক মামলায় রিমান্ড শেষে কাউন্সিলর রাজীবকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
Advertisement
গত ২০ অক্টোবর রাজীবকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ওইদিন ভাটারা থানার মাদক মামলায় ১০ দিন ও অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও)। রাতে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা মাদক মামলায় সাত দিন ও অস্ত্র মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন রাতে তাকে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন র্যাব-১ এর ডিএডি মিজানুর রহমান।
১৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা রাজীবকে গ্রেফতার করে র্যাব। ওই বাসা থেকে সাতটি বিদেশি মদের বোতল, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, তিন রাউন্ড গুলি, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
পরে তাকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের বাসা ও কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় র্যাব। রাতভর অভিযানে পাঁচ কোটি টাকার চেক ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। আগে থেকেই সতর্ক থাকায় কাউন্সিলর রাজীব আর্থিক লেনদেনের আলামত সরিয়ে ফেলেছেন বলে র্যাবের ধারণা।
মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ‘আমরা মোহাম্মদপুরে তার বাসা এবং অফিসে তল্লাশি করেছি। সেখানে তেমন কিছু পাইনি। কারণ আমরা যা বুঝতে পেরেছি তার বাড়িতে আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত যেসব ডকুমেন্ট ছিল সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তারই এক সহযোগীর বাড়ি থেকে একটি চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে। বইটিতে দেখা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে একদিনে (তিনটি চেকের মাধ্যমে) পাঁচ কোটি টাকা জমা দেয়া হয়েছে। আমরা এগুলো তদন্ত করে দেখছি কোথায় টাকা জমা দিয়েছেন, টাকাগুলো কোথায় গেছে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং এই অর্থ তিনি কোথায় খরচ করেছেন দেখা হবে। যদি এখানে মানি লন্ডারিংয়ের কোনো বিষয় থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা হবে।
Advertisement
২০১৫ সালে ডিএনসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে দৃশ্যমান কোনো ব্যবসাই ছিল না মোহাম্মদপুরের তারেকুজ্জামান রাজীবের। বর্তমানেও কাউন্সিলর হিসেবে সরকারি সম্মানীর বাইরে কোনো আয়ের উৎস নেই। তবুও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন স্বঘোষিত ‘জনতার কাউন্সিলর’ রাজীব।
২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় প্রার্থী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।
জেএ/এসআর/এমকেএইচ