দেশজুড়ে

প্রতিবন্ধী এক খোকনের গল্প

মানুষের জীবন একটাই। কিন্তু এ জীবনে কত রকমের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চলতে হয় তার হিসেব ক`জনই বা রাখে। তেমনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বীশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামের এক জীবন সংগ্রামী যুবক সিরাজুল ইসলাম খোকন। পিতার নাম নবাব আলী। সাত ভাই-বোনের এক বড় পরিবারের সদস্য তিনি। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত দুটি পা হারায় খোকন। কিন্তু জীবনতো আর থেমে থাকে না। বয়স বেড়ে যৌবন পা দিয়েছে, বিয়ের পর এক ছেলের বাবাও হয়েছেন খোকন। বড় সংসারের ভার বইতে না পেরে বাবা তাকে আলাদা করে দিয়েছেন। এরপর থেকে তার জীবন সংগ্রাম আরো বেড়ে গেছে। একটি ইঞ্জিন চালিতভ্যান চালায় খোকন। দুটি পায়ের সমস্যা থাকাই কেউ তার ভ্যানের কথা বলতে আসে না। তারপরও জীবন জীবিকার তাগিদে ত্রিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি ভ্যান কিনেছে খোকন। সমস্যা এখানেই শেষ নয়। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে প্রথম প্রথম সহজে যাত্রীরা তার ভ্যানে উঠতে চাইত না। এখন পরিচিত যাত্রীরা ওঠে। কিন্তু নতুন যাত্রীরা এখনো দ্বিধা করে তার ভ্যানে উঠতে। সংসার চালাতে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে খোকন পরিশ্রম করে ভ্যান চালিয়ে বাঁচতে চায়। কিন্তু তার এই জীবন সংগ্রামে সমাজের মানুষ যদি একটু সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে দেয় তবে কিভাবে খোকন টিকে থাকবে, কিভাবে শোধ করবে ঋণ ? আর এ ভাবনা তাকে মাঝে মাঝে দুর্বল করে দেয়। এরপরও খোকন এগিয়ে চলছে। খোকনের স্বপ্ন তার ছেলেকে লেখাপড়া শিখাবে। চার বছরের ছেলেকে সামনের বছরে স্কুলে ভর্তি করবে, তাকে উপযুক্তভাবে গড়ে তুলবে। খোকনের এই স্বপ্ন কি পূরণ হবে ?আলাউদ্দিন আহমেদ/এআরএ/এমএস

Advertisement