বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। সর্বত্র গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি পূর্ণিমা থিতির জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে সাগরের জোয়ারের পানি বেড়েছে ৭-৮ ফুট। এতে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কুতুবদিয়া, মহেশখালীর ঘলঘাটা, মাতারবাড়ি এলাকায় জোয়ারের পানি লোকালয় প্লাবিত করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
Advertisement
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান জানান, দুপুর ১২টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় বুলবুল কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের এক টানা গতিবেগ রয়েছে ১৩০ কিলোমিটার। যেটি দমকা বা ঝড়ো হাওয়ায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে।
এদিকে বুলবুলের তীব্রতা শুরু হলে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ভূমিধস ও ঝুপড়ি ঘরগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে জেলা শহরসহ পাহাড়ি অন্যান্য এলাকাতেও। তাই বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় গতকাল এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, জেলার ৮ উপজেলায় ৫৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বহুতল ভবনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোও। উপকূল হিসেবে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সদরের পোকখালী, চৌফলদন্ডী, খরুশকুল, টেকনাফের সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে জেলার উপকূল এবং আশপাশ এলাকার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সহযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। ০১৭১৫-৫৬০৬৮৮ নম্বর সচল রেখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। দুর্যোগ সংক্রান্ত সকল তথ্য এখানে সরবরাহ ও পাওয়া যাবে।
Advertisement
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোছাইন বলেন, দুর্যোগের সময় যাতে আইন-শৃঙ্খলার কোনো অবনতি না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর রেখে মাঠে রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। দৃষ্টি রাখা হচ্ছে পর্যটন এলাকাতেও।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/পিআর