তিস্তাপাড়ের মানুষের দিন যতই যাচ্ছে ফিকে হয়ে আসছে তাদের জীবনধারা। এবারের ঈদ আনন্দ কেড়ে নিয়েছে তিস্তার ভাঙন। আনন্দের বদলে তারা এখন দিশেহারা। তাদের মুখে হতাশার ছাপ। ঈদ করতে পারেননি পরিবারগুলো। ঈদ নেই তিস্তা পাড়ে।তিস্তার হিংস্র থাবায় ইতোমধ্যে তিস্তার গর্ভে বিলিন হয়েছে শতাধিক একর আবাদি জমি। কেড়ে নিয়েছে ৫০টি পরিবারের বসতভিটা। তিস্তার গাইডবানের উপরে ছোট্ট ঘর পেতে আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। বিশেষ করে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নে তৃতীয় দফা বন্যার ধকল সইতে না সইতেই আবারো ভাঙনের কবলে পড়েছে তিস্তা পাড়ের শতাধিক পরিবার। নতুন করে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। সরেজমিনে শুক্রবার বিকেলে তিস্তা পাড়ের বুলো বেওয়ার (৫০) বলেন, দুইটা বেটা (ছেলে) মোড় একটাও বাড়িত থাকেনা টাকাও দেয়না। মুই (আমি) একায় বাড়িত থাকন। নদীত দুইবার বাড়ি ভাঙিনিয়া গেছে মুই মানসির (মানুষ) বাড়িত থাকন। মোড় আর ঈদ নাই, থাকির নাপাও আর ঈদ। আমেনা বেগম (৩৫) জাগো নিউজকে জানান, হ্যামার থাকার জায়গা নাই আর ঈদ ! ঈদের আনন্দ দিয়া কি হবে ? গত রমজান মাসে নদীতে ঘড়বাড়ি ভেঙে নিয়ে গেছে এখন হ্যামা মানুষের জমিতে ঘর করি থাকছি।মঞ্জু মিয়া জাগো নিউজকে জানান, প্রতি বছর কুরবানি দেই এ বছর তিস্তায় ঘর-বাড়ি নদীতে ভেঙে যাওয়ায় এ বার কুরবানি দিতে পারিনি। গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী এলাকায়, শফিকুল ইসলাম (৩৫), কাশেম আলী (৪০), আবেদীন মিয়া (৫০), আয়নাল হক (৩০), মোহর মিয়া (৩৪), ইউনুস মিয়া (৩২), মোজাম্মেল হক তিস্তার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তিস্তার তীব্র ভাঙন এবার ঈদের আনন্দ কেড়ে নিল পরিবারগুলোর। শুধু তাই নয়, বসতভিটাসহ কয়েকশ একর আবাদি জমিও ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় একের পর এক জনপদ বিলীন হচ্ছে। বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার এসব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো এখনো খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বুলু জাগো নিউজকে জানান, ঈদের আগের দিন ভাঙন কবলিত প্রায় ৫০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাউল ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নে প্রায় ৫০ পরিবারে ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছি।রবিউল হাসান/এমএএস/এমএস
Advertisement