উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মনে করেন, ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান আর সততা মাপকাঠি থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের মাঝে এখন আর তা পরিলক্ষিত হয় না। বরং কে কত বেশি ব্যক্তিত্বহীন হতে পারে তারই যেন প্রতিযোগিতা চলছে। তিনি বলেন, ভিসিরা (উপাচার্য) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সর্বনাশ ঘটাচ্ছে।
Advertisement
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জাগো নিউজের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ টেনে হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘উপাচার্যদের বর্তমান আচরণে আমরা খুবই লজ্জিত। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম, তখন উপাচার্যদের ব্যক্তিত্ব দেখে মস্তক অবনত হতো। অথচ এখন উপাচার্যদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বাসভবন ঘিরে রাখে। শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের চায় না, এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে!’
বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এমন শিক্ষা মানুষ হওয়ার পরিবর্তে অমানুষ করে তুলছে। এমন নীতিহীন শিক্ষায় জাতির মুক্তি মেলে না। মানুষ হতে শেখায় না। এ কারণেই সর্বত্র দুর্নীতি। শিক্ষিতজনরাই অধিক মাত্রায় দুর্নীতি করছেন। দুর্নীতির সঙ্গে উপাচার্যদের নামও আসছে। এই চিত্র গোটা জাতির সর্বনাশ ডেকে আনছে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন স্বেচ্ছাচার হয়ে উঠছে ক্রমশই, অন্যরা আন্দোলন করছে। আন্দোলনের ভাষাও মারমুখী। তার মানে, সহনশীলতা ক্রমশই ফিকে হয়ে যাচ্ছে। বুয়েটে একজন মেধাবী ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে সরে যেতে হলো নানা অনিয়মের কারণে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দুর্নীতির খবর প্রকাশিত। ঢাবি, রাবি, রুয়েটেও আন্দোলন হচ্ছে। মনে হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠাই করা হয়েছে দুর্নীতি আর আন্দোলন করার জন্য। এ পরিস্থিতি থামানো দরকার। নইলে ঠেকতে হবে ভয়ঙ্করভাবে।’
এএসএস/এসআর/পিআর