গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান সাম্যের (১৩) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ নারীসহ ৮ জনকে আটক করছে। আটক হলো, সাম্যের সহপাঠি বন্ধু শাহরিয়ার খান হৃদয়, রাবেয়া, রুনা, সুজন, রফিকুল, আল-আমিন, জাকির হোসেন ও শিমুল। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে পরিবারের দাবি পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড।পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার ভোরে শহরের বর্ধনকুঠি বটতলা মোড় এলাকায় একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাম্যের লাশ উদ্ধার করা হয়। সাম্য গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার বাড়ি শহরের ঘোষ পাড়ায়। পুলিশ জানায়, বৃহষ্পতিবার দুপুর ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সাম্য। এরপর বিকেলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এসময় সাম্যের বাবা আতাউর রহমান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে পুলিশ ৮ জনকে আটক করে।সাম্যদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, সন্তানকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন মা দিল আফরোজ বানু। তিনি সন্তানের নির্মম মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। একমাত্র ছেলে সাম্যকে হারিয়ে কখনো নির্বাক আবার কখনো মানুষের ভিড়ে বার বার সাম্যকে খুজছেন। বার বার বলছিলেন, আমি কিছু চাই না, তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও! আবার কখনো বলছেন, আমি শয়তানদের শাস্তি চাই। বাবা পৌর মেয়র আতাউর রহমান নীরবে কেঁদে যাচ্ছিলেন আর চোখ মুছছিলেন। তিনি বললেন, তার প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, খুন করতে চাইলে আমাকে করতো, কিন্তু আমার এই নিস্পাপ সন্তানকে কেন খুন করা হলো।পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম বলেন, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে সহপাঠিদের সঙ্গে বাক বিতণ্ডার জের হিসেবে এই খুন বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে তদন্তে আরো বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে। গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম জাহিদুল ইসলাম জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য থেকে সাম্যের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের বর্ধনকুঠি এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে সহপাঠি শাহরিয়ার খান হৃদয় সাম্যকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। সাম্য’র হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চায় এলাকাবাসী। অমিত দাশ/ এমএএস/পিআর
Advertisement