জাতীয়

হরিষে বিষাদ!

রাজধানীর লালমাটিয়ার জাকির হোসেন রোডের রাজ মেটালের কর্মচারী আশরাফ ও মানসুর। দোকান মালিকের নির্দেশে গরু জবাইয়ে সহায়তা করতে আজ সকালে ঈদের নামাজ শেষে তার বাসায় চলে আসেন। তারা দুজনসহ  অন্যান্য কর্মচারীরা গরুকে মাটিতে ফেলেন। হুজুর যখনই ছুরি চালাবেন তখনই  গরু প্রচণ্ড শক্তিতে উঠে পড়তে চেষ্টা করে। এসময় হুজুরের হাতের ছুরি ছিটকে এসে দুজনের হাত কেটে যায়। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটতে থাকে। এসময় অন্যান্য কর্মচারীরা দুজনকে পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলাই করতে দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে রেফার করেন। শুক্রবার দুপুর এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আহত আশরাফ ও মানসুর বলেন, খুব আশা ছিল গরু কাটার পর সারাদিন আনন্দে ঘুরে বেড়াবো কিন্তু এখন ব্যথা আর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছি।শুধু এ দুজনই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গরুর কাটা সময় গরুর লাথি, শিংয়ের গুতো, ছুরি ছিটকে, চামড়া ছাড়াতে গিয়ে কেটে বিভিন্নভাবে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়ে পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রবিন হালদার ও শিপন কুমার দাস জানান, সকাল থেকে তারা প্রায় অর্ধশত রোগী দেখেছেন। তাদের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার ২/৩জন ছাড়া বাকি সকলেই কোন না কোনভাবে গরু দ্বারা বা গরুর কারণে আহত হয়েছেন।আহতদের কারও হাতের ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে, কারও কাঁধের হাড় সরে গেছে আবার কারও  বা হাত পা কেটে গেছে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত নার্স জানান,আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ২০জনকে অস্ত্রোপচার কক্ষে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রিলিজ দেয়া হয়। অস্ত্রোপচার কক্ষে কর্তব্যরত নার্স জানান,  এ পর্যন্ত ১০জনকে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে কথা হয় যশোরের কাপড় ব্যবসায়ী আবু মুসার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তিনি ধানমন্ডিতে এক পরিচিতজনের বাসায় ঈদ করতে এসেছিলেন। গরু কাটার সময় হঠাৎ গরু উঠে দৌড়ে পালানোর সময় তাকে গুতো দিলে সে ধাক্কা  খেয়ে ছুরির ওপর পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। মিরপুর পুলপাড়ার সজনী সড়কের বাসিন্দা মুজিবর গরু জবাইয়ের পর চামড়া ছাড়াচ্ছিলেন। হঠাৎ করে হাত ফস্কে ছুরি ছিটকে পা কেটে যায়। সকলেই জানান, গরুর কারণে ঈদের খুশী মাটি হয়েছে তাদের। এমইউ/এসকেডি/পিআর

Advertisement