সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ দেশে এলে জুরাইনে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল। সোমবার রাতে খোকার গোপীবাগের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
Advertisement
সোমবার নিউইয়র্কে খোকার মৃত্যুর খবর শুনে ঢাকায় তার গোপীবাগের বাসায় ছুটে যান রাজনৈতিক সহকর্মী-শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে দেখা যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব শায়রুল কবীর খানসহ অনেকে।
বড় ভাই সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, মরদেহ কবে দেশে আসবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। কারণ তার পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট নেই। এখন দেশে আনতে হলে সরকারের অনুমতি লাগবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ একজন মুক্তিযোদ্ধার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী দেশে তার মরদেহ আনতে যেন সহযোগিতা করে।
আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা খোকার শেষ ইচ্ছা দেশের মাটিতে যেন তার কবর হয়। যে দেশের মাটির জন্য যুদ্ধ করেছেন, সেখানে যেন কবর দেয়া হয়। খোকার মরদেহ এলে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে জুরাইনে। তাদের মা-বাবার কবরের পাশে।
Advertisement
সাদেক হোসেন খোকারা দুই ভাই ও ছয় বোন। এদের মধ্যে শুধু মাত্র ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আর একটি বোন দেশে থাকেন, বাকিরা নিউইয়র্কে।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ভাই (খোকা) রাজনীতি করলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা করতেন না। তিনি সবসময় পরিবারের সদস্যদের রাজনীতি বাইরে রাখতে চেষ্টা করতেন।
জানা যায়, গোপীবাগের তিনতলা বিশিষ্ট ‘শেকড়েই’ সাদেক হোসেন খোকার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। সেবার বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসে। তিনি যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী হন। তখন এই বাড়ি ছেড়ে হেয়ার রোডের মন্ত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকা বাড়িতে ওঠেন। মন্ত্রিত্ব শেষে গুলশানের ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করেন। তখন থেকে গোপীবাগের বাড়িতে মাঝেমধ্যে আসতেন।
তিনতলা এই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রাজনৈতিক বৈঠকেখানা রয়েছে। সেই বৈঠকখানায় নেতাকর্মীরা অপেক্ষায় করছেন নেতার মরদেহের অপেক্ষা। প্রিয় নেতার সঙ্গে ঘটে যাওয়ার মধুর স্মৃতিগুলো একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ির নিচতলায় সাদেক হোসেন খোকার জন্য শোকবই খোলা হয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপির সরকার ক্ষমতায় আসলে খোকা মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী হন। ওই সময় তার এপিএস ছিলেন নজরুল ইসলাম কিরণ।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন তাদের প্রিয় নেতার বিভিন্ন সময়ে সুখের স্মৃতিটুকু লিখে রাখতে। এই জন্য শোকবই খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
৯৫ সাল থেকে খোকার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করছেন নুর আলম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এই সময়ে তিনি কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন আমি দেখিনি। আসলে আমার আমাদের অভিভাবকে হারিয়েছি। এখন শুধু তার মরদেহ একবার দেখার অপেক্ষা আছি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ১ নভেম্বর কথা হয়েছে। অসুস্থ থাকার কারণে খুব একটা কথা হয়নি। তার বড়গুণ ছিল, তিনি কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি।
কেএইচ/বিএ/এমকেএইচ