জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালের ওপর ‘কথিত হামলার’ ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে ৫টি ধারায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন বলে আশুলিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনকারী নজির আমিন চৌধুরী জয় (জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি) শিক্ষার্থীদের রোষনলে পড়লে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল তাকে উদ্ধার করতে যান। এ সময় আন্দোলনকারীরা সহকারী প্রক্টরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৫০-৬০ জন আন্দোলনকারী সহকারী প্রক্টরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার পুরুষাঙ্গে ধারালো কোনো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। ফলে রক্তপাত ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
এদিকে এই মামলাকে ‘গায়েবি, মিথ্যাচার ও নাটক’ উল্লেখ করেছেন উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে’ এক সংবাদ সম্মেলনে এই মামলাকে ‘প্রতারণামূলক নাটক’ ও আন্দোলনকে দমানোর ‘অপকৌশল’ বলে জানিয়েছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে আন্দোলনরতরা।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘গত ৩০ অক্টোবর আমাদের ধর্মঘট কর্মসূচি চলাকালে দুজন আন্দোলনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে সহকারী প্রক্টর তার বিভাগের কিছু অনুগত ছাত্রদের নিয়ে আমাদের দুই আন্দোলনকারীকে হেনস্থা করে। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নজির আমিন চৌধুরী জয়কে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই দেখেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলনকারীকে মাটিতে ফেলে সহকারী প্রক্টর শৈবাল সুস্থভাবে হেঁটে যান। দুজন আন্দোলনকারী থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনের নামে মামলা করেছে। যার মাধ্যমে প্রমাণ হয় এই দুর্নীতিবাজ ভিসি আন্দোলনেক দমাতে এই গায়েবি মামলা দায়ের করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবরোধ ও সর্বাত্মক ধর্মঘট চলবে। হামলা-মামলা করে আন্দোলনকে দমানো যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি যেকোনো সময় ভিসিকে তার বাস ভবনে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেন।
Advertisement
অপরদিকে শনিবার সর্বাত্মক ধর্মঘটের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫টি বিভাগে চলমান সাপ্তাহিক ও সান্ধ্যকালীন কোর্সের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। রোববারও সর্বাত্মক ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ফারুক হোসেন/এমবিআর/পিআর