বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, যেহেতু আমি ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য। এই আসন ঘিরেই ক্যাসিনোকাণ্ড তোলপাড়। এই ক্যাসিনোকাণ্ডের সঙ্গে আমাকেও জড়িয়ে দেয়া হচ্ছে পত্রিকায় মিথ্যা সূত্র উদ্ধৃতি দিয়ে। আমি আমার কর্মীদের বলে যেতে চায়, আমার জীবনে সততার পরীক্ষার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আমি আমার জীবনে সৎ ছিলাম, সৎ আছি।
Advertisement
শনিবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে তিনি একথা বলেন।
মেনন বলেন, অনেক লড়াইয়ের সাক্ষী আমি, কালেরসাক্ষী আমি। হয়তো সেই চলার পথে আমাদের অনেক ভুল-ভ্রান্তি আছে। কিন্তু একটি কথা বলতে চায় আমাদের সাহস আমরা হারায়নি। আমার কমরেডরা এখনও মাঠে লড়ছেন।
এক সময় বামফ্রন্টে থাকলেও বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে যোগ দেয় ওয়ার্কার্স পার্টি। এই কারণে দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এবার কংগ্রেসের আগেও মেননের বিরুদ্ধে আদশচ্যুতির অভিযোগ তুলে দল ছাড়েন সাত নেতা।
Advertisement
তাদের উদ্দেশে মেনন বলেন, আমাদের নৌকায় তুলে দিয়ে এখন তারা বলছেন, তারা নৌকা মানেন না। নতুন ঐক্যের কথা বলছেন। আমি তাদের বলতে চাই, ওয়ার্কার্স পার্টিই একমাত্র প্রাসঙ্গিক বামপন্থি দল। আমাদের কিছু বন্ধু আমার মতাদর্শ বিচ্যুতির কথা বলেছেন, কমিউনিস্ট আন্দোলনের শতবর্ষে কমিউনিস্ট ঐক্যের কথা বলছেন। আমি বলছি, চক্রান্ত করে, ষড়যন্ত্র করে আর যাই হোক, ঐক্য হয় না। কমিউনিস্ট ঐক্য দূরে থাক, কোনো গণতান্ত্রিক ঐক্য হয় না, ঐক্য হয় রাজপথের লড়াইয়ে।
তিনি বলেন, কোন বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলছি না, কথা বলতে পারছি না। ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বললে পার্লামেন্টে নোটিশ গ্রহণ করা হয় না। গ্যাস দাম বৃদ্ধির কথা বললে আলোচনা হয় না, হতে পারে না। এটাই হচ্ছে বাস্তব। সব মতকে এগিয়ে আসতে দিন। মতপ্রকাশের অধিকার দিয়ে দৃঢ়ভাবে প্রস্তুত করুন ডিজিটাল বাংলাদেশ।
মেনন বলেন, থাইল্যান্ডের জঙ্গলে আমার দেশের মানুষের গণকবর আবিষ্কৃত হয়, মালয়েশিয়ার রাবার বাগানে আমার দেশের তরুণরা মরেন। আর আমরা তাদের রেমিট্যান্স নিয়ে বলি আমরা দারুণ রেকর্ড করেছি। রিজার্ভের মূল অংশ হচ্ছে আমাদের গরিব মানুষ। তরুণরা যারা বিদেশে গিয়ে টাকা উপার্জন করে দেশে পাঠান। কোন প্রফেশনাল, বড়লোকের দলতো টাকা পাঠায় না। বরং আগে ২২ পরিবার এ দেশ থেকে টাকা পাকিস্তানে নিত, অন্তত পাকিস্তানে থাকত। এখন বাংলাদেশের টাকা দেশে থাকে না, বিদেশে চলে যায়। আজকে খোঁজ নিন, তালিকা তৈরি করুন কারা কানাডায় বাড়ি বানিয়েছেন, কারা সেকেন্ডহোম বানিয়েছেন।
জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস উদ্বোধন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক বাদশা। এবারের কংগ্রেসে ৫৮টি জেলা থেকে ৭৫০ প্রতিনিধি অংশ নেন।
Advertisement
এইউএ/জেএইচ/এমকেএইচ