দীর্ঘদিন ধরে রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তির লোহার গেট সংলগ্ন পাকা রাস্তার ওপর দাহ্যজাতীয় বিস্ফোরক পদার্থ দ্বারা বিশেষভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বেলুন তৈরি করে বিক্রি করছিলেন আবু সাঈদ। তার বেলুন বিক্রির সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাত শিশু নিহতসহ ২০ শিশু, নারী ও পুরুষ আহত হয়েছে। আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে চিকিৎসাধীন আসামি আবু সাঈদকে পিউব্লিউ ইস্যু করাসহ চিকিৎসা শেষে কোর্টে হাজির করার অনুমতির আবেদন করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপক কুমার দাস।
ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আবু সাঈদ মামলার ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামি। তিনি রূপনগর থানাধীন রূপনগর আবাসিক ১১ নং রোডের পূর্ব মাথায় ঝিলপাড়া বস্তির লোহার গেট সংলগ্ন পাকা রাস্তার ওপর দাহ্যজাতীয় বিস্ফোরক পদার্থ দ্বারা বিশেষভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বেলুন তৈরি করে বিক্রয় করার সময় সাত শিশু নিহত করাসহ ২০ জন শিশু, মহিলা ও পুরুষকে আহত করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘটনাস্থলে দাহ্যজাতীয় বিস্ফোরক পদার্থ দ্বারা বিশেষভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বেলুন তৈরি করে বিক্রি করছেন।
Advertisement
গতকাল পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর পুলিশ স্কটের মাধ্যমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আহত আসামি আবু সাঈদ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পিডব্লিউ ইস্যু করে আসামির সুস্থতা সাপেক্ষে চিকিৎসা শেষে আদালতে আনার অনুমতি প্রার্থনা করছি।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
এর আগে আজ (বৃহস্পতিবার) বেলুন বিক্রেতা আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ (খ) সহ পেনাল কোডের ৩০৪ ধারায় মামলা করেন রূপনগর থানার উপ-পরিদর্শক সুমন বণিক।
যদিও ঢামেকের অর্থোপেডিক্স বিভাগে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন বেলুন বিক্রেতা আবু সাঈদ জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘সাভারে আমার এক চাচার কাছ থেকে এ ব্যবসা (গ্যাস বেলুন বিক্রি) শিখেছি। ১৫ দিন ধরে আমি এ ব্যবসা করছি। স্বাভাবিকভাবে যেভাবে বেলুনে গ্যাস ভরা হয় কালও (বুধবার) একইভাবে ভরেছি। এমন বিস্ফোরণ হবে কল্পনাও করতে পারিনি। বিস্ফোরণের পর ৫ মিনিট আমার কোনো জ্ঞান ছিল না।’
Advertisement
গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) রূপনগর থানার শিয়ালবাড়ি বস্তির শিশুরা বেলুন কিনতে গিয়ে ভ্যানগাড়িতে থাকা বেলুনে ভরা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হয়েছে। তারা হলো- নিহাদ, রিয়া, শাহিন (১০), নূপুর (৭), ফারজানা (৯), জান্নাত (১৪) ও রমজান (৮)। একই ঘটনায় আহত ও দগ্ধ হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। তাদের মধ্যে সাতজন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জেএ/এসএইচএস/পিআর