দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদকে সংসদীয় কমিটিতে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। বেসিক ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতি নিয়ে হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট রায় থাকা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি ছাড়াও এ মামলায় জড়িত সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকর্তাদেরও সংসদীয় কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বেগম সাহারা খাতুন, মো. আব্দুল মজিদ খান, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, শেখ ফজলে নূর তাপস এবং শামীম হায়দার পাটোয়ারী অংশ নেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস বেসিক ব্যাংক দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা কমিটিকে অবহিত করেন। এ সময় কমিটি হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপর পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করে দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে দেখা যায়, আব্দুল হাই বাচ্চু রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের বোর্ড চেয়ারম্যান থাকাকালে ২০১০-১৩ সালের মধ্যে নিয়ম ভঙ্গ করে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই দুদকের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বেসিক ব্যাংকের লুটপাটের বিশদ বিবরণ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য মূলত বাচ্চুকেই দায়ী করা হয়।
Advertisement
২০১৫ সালে দুদক বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে ৫৬টি মামলা করে। তবে এসব মামলার কোনোটিতেই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু জাগো নিউজকে বলেন, এর আগে গত বছরের মে মাসে বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতির তদন্তে জড়িত দুদকের কর্মকর্তাদের তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলো আজও মানা হয়নি। এজন্য পরবর্তী বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের সংসদীয় কমিটিতে ডাকা হয়েছে।
জানা যায়, রেজিস্ট্রি দলিল হাতে না লিখে শতভাগ কম্পিউটারে কম্পোজ করে লেখার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এছাড়া ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠকে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ভূমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে আলোচনা হয়। জনদুর্ভোগ লাঘবে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, জনদুর্ভোগের জন্য কারা জড়িত এবং কীভাবে জনগণকে সহায়তা দেয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
Advertisement
কমিটির সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারকে আহ্বায়ক, মো. আব্দুল মজিদ খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বেগম রুমিন ফারহানাকে সদস্য করে চার সদস্যের সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়।
বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/এএইচ/পিআর