মক্কায় মসজিদ আল-হারামে ক্রেন দুর্ঘটনার চার বছর পর হতাহত তিন বাংলাদেশিকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সৌদি সরকার।
Advertisement
দুর্ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ আবুল কাশেম সুফির পরিবার এবং আহত সরদার আবদুর রব ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনকে ক্ষতিপূরণের চেক দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিহতের পরিবার ও আহতদের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
নিহত মোহাম্মদ আবুল কাশেম সুফির মা রাজিয়া বেগম ও স্ত্রী রুবিনা আক্তার চৌধুরীর হাতে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা, আহত সরদার আবদুর রব ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনকে ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা করে দেয়া হয়।
Advertisement
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক চেক বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। তারই ফলস্বরূপ ২০১৫ সালের ওই দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত বাংলাদেশিরা এই ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন।
তিনি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত আবদুর রব বলেন, ‘দুর্ঘটনার দিন ঘরের সামনে বসে দোয়া দরুদ পড়িছিলাম। ব্যাপক ভিড় ছিল।এমন সময় আকাশটা অন্ধকার হয়ে এলো। প্রচণ্ড রকমের শব্দ হলো। আমার পাশে অন্য দুইজন ছিলেন। সবাই দৌড়াদৌড়ি, কান্নাকাটি শুরু করে। আমিও উঠতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু পারছিলাম না। আমি দেখলাম, আমার বাম পায়ের দিকে গুড়া-গুড়া হয়ে গেছে। হাত দিয়েই বুঝা যাচ্ছিল ওখানে কোনো হাড় নেই। ওখান থেকে অন্যরা চেষ্টা করছিল চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে।’
Advertisement
‘তখন সেখানে অনেক অন্ধকার হয়ে যায়। সব একসেলটর বন্ধ হয়ে গেছে। তারা আর আমাকে নামতে পারলো না। সে সময় অনেকে মারা গেছেন, আহত অবস্থায় রয়েছেন। হাসপাতালে দুই মাসের মতো চিকিৎসাধীন ছিলাম। ওখানে সৌদি সরকার চিকিৎসা দিয়েছিল। বিছানা থেকে ওঠার মতো শক্তি ছিল না। আামার টিকিট কেন্সেল (বাতিল) হয়ে গেছিলো। পরে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আমি দেশে ফিরে আসি। আসার পর প্রায় তিন বছর আমার চিকিৎসা নিতে হয়েছে।’ আবদুর রবকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাকে সৌদি সরকার ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা দিয়েছে। বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক হওয়ায় আমার এই টাকাগুলো অতি সহজে পেলাম। এ কথা শুনে আবদুর রব সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মক্কায় মসজিদ আল-হারামের নির্মাণকাজে ব্যবহৃত একটি ভ্রাম্যমাণ ক্রেন ভেঙে পড়ে। এতে ১১৮ জন মারা যান, আহত হন ৩৯৪ জন।
হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই তখন হজ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা সফর করছিলেন। নিহত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের একজন ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশের তিনজন ছিলেন।
জেপি/জেডএ/জেআইএম