সিলেটে অপহরণের পর পৈশাচিক কায়দায় হত্যার প্রায় ছয়মাস পর শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় এক পুলিশ কনস্টেবল ও জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিবসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।বুধবার বিকেলে সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. মোশাররফ হোসাইন।হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, পুলিশ ও র্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, জেলা ওলামা লীগ নেতা নুরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিদ হোসেন মাসুমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে। এর মধ্যে মাছুম পলাতক ও বাকিরা কারান্তরীণ রয়েছেন।এ বছরের ১১ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এবাদুর, রাকিব, গেদা মিয়া ও মাসুদ মিলে শিশু আবু সাঈদকে অপহরণ করেন। পরের দিন কনস্টেবল এবাদুরের বাসায় শিশুটিকে হত্যা করেন ঘাতকরা। মরদেহ গুম করে রাখা হয় এবাদুরের ভাড়া বাসার ছাদের চিলেকোঠায়।হত্যার পর ঘাতকেরা সাঈদের বাবা ও মামা জয়নাল আবেদীনের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে ১৪ মার্চ রাত ১০টায় কনস্টেবল এবাদুরের বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে সাতটি বস্তায় মোড়ানো আবু সাঈদের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহের পর রাত দেড়টার দিকে মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়ে দেয়।এ ঘটনায় সিলেট মহানগরীর বিমানবন্দর থানার পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর, জেলা ওলামা লীগের এক নেতা নুরুল ইসলাম রাকিব, সোর্স আতাউর রহমান গেদাকে গ্রেফতার করা হয়। এদের তিনজনই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।শিশু হত্যার এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নগরবাসী। খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।প্রসঙ্গত, নিহত আবু সাঈদ রায়নগর হজরত শাহ মীর (র.) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও একই এলাকার দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার এড়ালিয়া বাজারের খশিলা এলাকায়।ছামির মাহমুদ/বিএ
Advertisement