মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযানে নিহত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদিকে সাগরে সমাহিত করা হয়েছে। যদিও মার্কিন ওই অভিযানের ব্যাপারে এখনও পরিষ্কার কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
Advertisement
মঙ্গলবার মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ফরাসী সংবাদমাধ্যম এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সিরিয়া এবং ইরাকে গত পাঁচ বছরের সহিংসতা আইএসের এই প্রধানের নেতৃত্বেই হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন গোয়েন্দারা অবস্থান শনাক্তের পর রোববার গভীর রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আইএসের প্রধানকে হত্যা করে।
বাগদাদিকে হত্যার এই অভিযানে মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে সিরিয়ার কুর্দিরা। তবে অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অজ্ঞাতনামা প্রশিক্ষিত কুকুর বাগদাদিকে হত্যার মিশনে নেমে তাড়া করে বীরের খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।
রোববার রাতে মার্কিন সৈন্যরা যখন সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বাগদাদির গোপন আস্তানায় অভিযান চালায় তখন সেই অভিযানে অংশ নেয় একদল প্রশিক্ষিত মার্কিন কুকুর। ভোর রাতে ইরাক থেকে মার্কিন সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার সিরিয়ার উত্তরে প্রবেশের পর প্রথমে বাগদাদির লুকিয়ে থাকা ভবনের আশপাশের সুরঙ্গে বোমা হামলা শুরু করে।
Advertisement
এর এক পর্যায়ে আইএসের শীর্ষ এই জঙ্গি তার তিন সন্তানকে নিয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে একটি সুরঙ্গ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। সেই মুহূর্তে ওই সুরঙ্গে বাগদাদিকে তাড়া করেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর ওই কুকুর। তাকে ধরে ফেলার আগেই বিস্ফোরক ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্তানদেরসহ নিজেকে উড়িয়ে দেন বাগদাদি।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, তার মৃত্যু আইএসের জন্য ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ইদলিব অঞ্চলের প্রত্যন্ত একটি ভবনে বাগদাদিকে হত্যার ওই মিশনে শতাধিক মার্কিন সৈন্য অংশ নেয়। এই অভিযানে রাশিয়া, কুর্দি, তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সহায়তা প্রয়োজন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মিলে বলেছেন, সৈন্যরা বাগদাদির ওই ভবন থেকে দুই বন্দিকে উদ্ধার করেছে। এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার জন্য একটি সুরক্ষিত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বাগদাদির মরদেহ। পরে ওই মরদেহ বাগদাদির বলে নিশ্চিত করা হয়। তিনি বলেন, বাগদাদির দেহাবশেষ সাগরে সমাহিত করা হয়েছে এবং এটি করা হয়েছে যথাযথ নিয়ম মেনেই। অজ্ঞাত স্থানে সাগরে বাগদাদির মরদেহ সমাহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পেন্টাগনের অপর এক কর্মকর্তা। ২০১১ সালে আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে হত্যার পর একইভাবে সমাহিত করেছিল মার্কিন বিশেষ বাহিনী।
সূত্র : এএফপি।
Advertisement
এসআইএস/পিআর