১৯৯৭ সালে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর পর যে কয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। সালমান শাহের মৃত্যুর দুই বছর পর ১৯৯৯ সালে ঢাকা ক্লাবে খুন করা হয় আরেক চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে। এ হত্যায়ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
Advertisement
রোববার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে তার বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সেখানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পাওয়া যায়। আটক করা হয় দুইজনকে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে প্রথম গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। প্রচলিত আছে, এক নারী নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণেই এরশাদ তাকে গ্রেফতার করিয়েছিলেন।
তিনি হলেন বাংলাদেশে একজন রহস্যময় ব্যক্তি। নাম- আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সপরিবারে থাকতেন থাইল্যান্ডে। সেখান থেকেই বাংলাদেশে মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করতেন তিনি। গুলশানের বাসাটির দেখাশোনা করতেন তার ভাই ও বোন।
Advertisement
হত্যা ও মাদক পাচারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। করেছিলেন ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনা।
শোনা যায়, সালমান শাহ নিহত হওয়ার আগে একটি পার্টিতে সালমানের স্ত্রী সামিরাকে চুমু দেয় আজিজ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সবার সামনে আজিজকে চড় মারে সালমান। এটাকে মোটিভ হিসেবে ধরেন অনেকেই। যদিও হত্যাকাণ্ডের সময় থাইল্যান্ডে ছিলেন আজিজ। সালমান হত্যাকাণ্ড নিয়ে দুইবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় আজিজকে। কিন্তু কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এর দুই বছর পর ঢাকা ক্লাবে খুন করা হয় আরেক চিত্র নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। এ হত্যাকাণ্ডেও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও তার পরিবারের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। সে সময় সোহেল চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে ছিল ঢাকার ডিশ ব্যবসা। এ ব্যবসা নিজেদের কবজায় নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা।
জানা গেছে, ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর ভারতের গুজরাট থেকে বাংলাদেশে আসে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার। এরপর পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করেন তারা।
Advertisement
আরমানিটোলায় ১৯৬২ সালে জন্ম হয় আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের। তিনি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইস্পাত প্রযোজকের পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন। দেশে তার বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরেও তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসা আছে।
মাদক ব্যবসার সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক খুরশিদ আলম জানিয়েছেন।
জেডএ/পিআর