জাতীয়

আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাসা যেন মিনি বার!

পাশাপাশি দুটি ছয়তলা ভবন। ভবন আলাদা হলেও একটি থেকে আরেকটিতে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। দুটি ভবনেই বসবাস করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের আত্মীয়-স্বজন। ওই একটি ভবনের ছাদে ক্যাসিনো সামগ্রী ও সিসা বার এবং অপর ভবনের চারতলার একটি কক্ষে বিপুল পরিমাণ মদ পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

Advertisement

রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৫৭ নম্বর সড়কের ১১/এ নম্বর বাসায় এ অভিযান শুরু করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। অভিযানে ওই বাসা থেকে ৩৮২ বোতল মদ, ২ প্যাকেট সিসা(৪‌কে‌জি), ২শ গ্রাম গাজা ও ২৪ ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। এছাড়া আজিজের ভাই রাজা মোহাম্মদের বাসা থেকেও ৮ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয় বলে জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক খুরশিদ আলম।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে বাসাটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

খুরশিদ আরও বলেন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে। একটি ভবনের চারতলার ফ্ল্যাট আজিজের স্ত্রী নওরীন ব্যবহার করেন। ওই ভবনের ছাদে সিসা বার, ক্যাসিনোর সামগ্রী পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

ভবনের তিনতলায় থাকেন আজিজের সহোদর প্রয়াত রাজা মোহাম্মদ ভাইয়ের ছেলে ওমর মোহাম্মদ ভাই। ওমরের ফ্ল্যাটেও কয়েকটি মদের বোতল পাওয়া গেছে বলে জানান খুরশিদ। অভিযানে মো. পারভেজ ও নবীন মণ্ডলকে নামে গুলশানের ওই বাসার দুই কেয়ারটেকারকে (তত্ত্বাবধায়ক) আটক করা হয়েছে।

অভিযানকালে আটক নবীন মণ্ডল সাংবাদিকদের জানান, গত ৭-৮ বছর ধরে তিনি ওই বাসায় কাজ করে আসলেও কখনও আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে দেখেননি। অপর আটক পারভেজ জানান, তিনি এক মাস আগে এই ভবনের কাজ নিয়ে যোগ দেন।

অভিযান শেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ছাদের সিসা বারটি ওমর মোহাম্মদ ভাই চালাতেন। তবে অভিযানকালে তাকে এখানে পাওয়া যায়নি। ভবনের চারতলার এক পাশের ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ মদ। ওই ফ্ল্যাটের অন্য কক্ষগুলো খালি দেখা গেছে।

ফজলুর রহমান বলেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ফ্ল্যাটটিতেই বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। এই মাদকের সাথে যেই জড়িত থাক তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হবে।

Advertisement

উল্লেখ্য, শেয়ার কেলেঙ্কারির এক মামলায় গত বছর আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে পুঁজিবাজার বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল। যদিও তিনি ওই পরোয়ানার আগে থেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক হলেও তার পরিচিতি বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবেই। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে তার নাম এসেছিল।

অলিম্পিকের পাশাপাশি আমবী ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তার স্ত্রী নওরীন আজিজ এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

জেইউ/এমএসএইচ