নারায়ণগঞ্জে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর যুবদলের র্যালি ও সমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করলে যুবদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
Advertisement
একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে যুবদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ২০/২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন যুবদল নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, রোববার শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে জেলা যুবদল সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী র্যালি বের করেন। র্যালিটি শহরের ২নং রেলগেট গোল চত্ত্বর এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ব্যানার কেড়ে নেয় এবং ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ ও যুবদল নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
একই সময় মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা একেক করে শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় জড়ো হন। পরে তারা সেখান থেকে মহানগর যুবদল সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে র্যালি বের করেন। এ সময় মিছিল থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারের সমালোচনা করে স্লোগান দেন তারা। র্যালিটি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে পৌঁছানো মাত্রই বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নিতে গেলে যুবদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরে বাধা অতিক্রম করে যুবদল নেতাকর্মীরা র্যালির চেষ্টা করলে মাকছুদুল আলম খন্দকারকে আটকের চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় নেতাকর্মীরা এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করলে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আবারও সমাবেশ করতে চাইলে যুবদল নেতাকর্মীদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
Advertisement
জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, শহরের নিতাইগঞ্জ জিমখানা আলাউদ্দিন খান স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ২নং রেল গেট এলাকায় বিএনপির ভেঙে ফেলা কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, এ সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বক্তব্য দেয়ার পর কর্মসূচি সমাপ্ত করা হবে বলে পুলিশকে বলা হয়। কিন্তু উল্টো তারা কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নেয় এবং ধাওয়া দিয়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তিনি অভিযোগ করেন পুলিশের লাঠিচার্জে যুবদলের বেশ কয়েকজন লোক আহত হয়েছেন।
মহানগর যুবদল সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার বলেন, এটা কোনো দলীয় কর্মসূচি ছিল না। যুবদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশি হামলায় মহানগর যুবদলের ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এ দেশে একটি সংবিধান রয়েছে। সংবিধান হলো রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের চুক্তি। কিন্তু এ রাষ্ট্র জনগণের সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। আজ পুলিশ দিয়ে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার পণ্ড করে দেয়া হয়েছে। যে পরিস্থিতি শুরু হয়েছে তাতে মানুষের নিঃশ্বাস নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ জুলুম-অত্যাচার থেকে আল্লাহ ছাড়া রক্ষা করার কেউ নেই। পাকিস্তান, ব্রিটিশ, এরশাদ কেউ টিকে থাকতে পারেনি, এ সরকারও টিকবে না।
Advertisement
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যুবদলের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালনের কোনো অনুমতি নেয়নি। তারা যাতে জনগণের চলাচলে বাধা, কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়েছে। কারো ওপর লাঠিচার্জ করা হয়নি।
মো. শাহাদাত হোসেন/এমএমজেড/এমএস