তুরস্ক সরকার জোর করে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় শরণার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, আঙ্কারা সিরিয়ার ভেতরে ঢুকে সামরিক অভিযান চালিয়ে কথিত নিরাপদ অঞ্চল তৈরির কথা বলে সেখানে তারা লাখ লাখ শরণার্থীকে যেতে বাধ্য করছে।
Advertisement
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদেনে জানিয়েছে, তুরস্কে বসবাসরত ২৮ জন শরণার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে তারা। সেসব শরণার্থী জানিয়েছে তুর্কি পুলিশ তাদেরকে পিটিয়ে, হুমকি দিয়ে কৌশলে ‘স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক’ এমন কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আসকয় জানিয়েছেন, শরণার্থীদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠানোর কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমন প্রতিবেদন অসত্য ও অবাস্তব। এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করছে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে আমরা যখন অন্তত ৩৬ লাখ সিরিয়ানসহ প্রায় ৪০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছি তখন তাদেরকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো প্রশ্নই আসে না। এটা তুরস্কের নীতি নয়।’
Advertisement
তিনি আরও জানান, ‘তুরস্ক সরকার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছে। আমরা সব সময় চেয়েছে শরণার্থীরা যেন স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা।’
তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত ৯ অক্টোবর তুরস্ক সিরিয়ায় আন্তঃসীমান্ত সামরিক অভিযান শুরু করার আগেই তারা এসব মানুষের স্বাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাদের হাতে এর প্রমাণ আছে। বাসে করে অনেক সিরীয় শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে দাবি সংস্থাটির।
সিরিয়ায় আট বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটির প্রায় ৩৬ লাখ শরণার্থী তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে। তবে সিরীয় শরণার্থীরা ক্রমেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠায় তুরস্ক এমন পদক্ষেপ নিতেও পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এসএ/এমএস
Advertisement